ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪ আশ্বিন ১৪৩১
ই-পেপার শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ব্রেকিং নিউজ: নতুন কোনো ইটাভাটার অনুমতি নয়, ৩ হাজার ৪৯১ টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা      রাজধানীতে তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী      নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াতের নির্দেশে বেনাপোল বন্দর পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি      সাভার মডেল থানায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার বিরুদ্ধে আরো দুটি হত্যা মামলা      নেত্রকোনায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত      




বারহাট্টা কলেজ দখলের পর নিজেই হলেন অধ্যক্ষ
মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) সংবাদদাতা
Published : Thursday, 19 September, 2024 at 5:38 PM
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় থাকা 'বারহাট্টা  কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ'টি প্রভাব খাটিয়ে দখল নিয়ে ওই কলেজের খন্ডকালীন এক শিক্ষক হলেন কলেজের অধ্যক্ষ।

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ কামাল হোসেনের মৃত্যুর পর  ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কলেজের খন্ডকালীন শিক্ষক জিয়াউল হক অধ্যক্ষ হয়েছেন। স্থানীয় প্রভাব কাটিয়ে প্রতিষ্ঠাতার স্ত্রী ও প্রভাষক শিল্পী বেগমকেও কলেজ ছাড়া করেছেন জিয়াউল। সেইসাথে আত্মসাৎ করছেন কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তির লাখ লাখ টাকা।

এমন অভিযোগ করেছেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ প্রয়াত কামাল হোসেনের স্ত্রী ও প্রভাষক শিল্পী বেগম। একই অভিযোগ করেছেন কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাসুদুর রহমানও।

শিল্পী বেগম ও মাসুদুর রহমানের দাবি- জিয়াউল কলেজের খন্ডকালীন শিক্ষক ছিল। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মারা যাওয়ার পর স্থানীয় প্রভাব দিয়ে কলেজটি দখল করে নেন জিয়াউল। পরে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নিজেই কলেজের অধ্যক্ষ বনে যান তিনি। এরপর কলেজ ছাড়া করেন প্রতিষ্ঠাতার স্ত্রী ও প্রভাষক শিল্পী আক্তারকে।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকসহ নানা দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও সুফল পাচ্ছেন না শিল্পী বেগম। 

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে বারহাট্টা উপজেলার স্বল্পদলাশ গ্রামে 'বারহাট্টা কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ' নামে ওই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন কামাল হোসেন। শুরু থেকে অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজটিতে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এসময় তাঁর স্ত্রী শিল্পী বেগমকে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এছাড়া খন্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে মো. জিয়াউল হকসহ আরও তিনজন ছিলেন। আর কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ৭ জন। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের রেজিষ্ট্রেশন পায়। এটির প্রতিষ্ঠান কোড-৫৮০২৭। প্রতিষ্ঠানটিতে 'কম্পিউটার অপারেশন' ও সেক্রেটারিয়েল সাইন্স' এ দুটি ট্রেড রয়েছে। ২০২২ সালে অধ্যক্ষ কামাল হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। পরপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন খন্ডকালীন শিক্ষক জিয়াউল হক। 

অভিযুক্ত জিয়াউল হকের বাড়ি স্বল্প দশাল গ্রামে। আর কলেজের প্রতিষ্ঠাতা কামাল হোসেন ও তার স্ত্রী শিল্পী বেগম সদর উপজেলার বাসিন্দা। 

প্রভাষক শিল্পী বেগম অভিযোগ করে বলেন, জিয়াউল এই কলেজের খন্ডকালীন শিক্ষক ছিল। ২০২২ সালে আমার স্বামী কামাল হোসেন মারা যাওয়ার পর কলেজটি দখল করে নেয় জিয়াউল। ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে নিজেই অধ্যক্ষ বনে যান। আমাকে বহিষ্কারের নকল কাগজ তৈরি করেন। পরে আমাকে আর কলেজে ঢুকতে দেয়নি কলেজে। নানা হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। কলেজটি যে গ্রামে অবস্থিত জিয়াউল হকের বাড়ি সেখানেই। এলাকার প্রভাব খাটিয়ে তিনি কলেজটি দখল করে রেখেছেন। এদিকে জিয়াউল একাউন্টিংয়ে পড়াশোনা করেছেন। আমাদের কলেজে এমন কোন সাবজেক্ট নেই। তাই কলেজে তার স্থায়ী নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ নেই। কলেজ এমপিও হলেও জিয়াউল জেনারেল পড়াশোনা দিয়ে এমপিও হতে পারবেন না। জোর করে কলেজটি দখলে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তির লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছেন। আমার স্বামীর হাতে গড়া কলেজটি উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, অধ্যক্ষ কামাল হোসেনের মৃত্যুর পর কলেজটি দখলে করে জিয়াউল হক।  জিয়াউল তৎকালীন আওয়ামী লীগের একজন এমপিকে নানা কৌশলে ম্যানেজ করে কলেজের পাসওয়ার্ড নম্বর কারিগরিবোর্ড থেকে নিয়ে এসেছে। পরে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে অধ্যক্ষ বনে যান। কলেজের অনুমোদিত ট্রেড অনুযায়ী জিয়াউল প্রভাষক হতে পারেন না, কারণ তার পড়াশোনা জেনারেল ডিসিপ্লিনে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল হক বলেন,  কলেজ দখলের কোন ঘটনা ঘটেনি। কলেজের এডহক কমিটি রয়েছে। পদাধিকার বলে কমিটির সভাপতি বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও)।   সভাপতির নিয়োগেই আমি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছি। নিয়োগসহ সবকিছুই আমার বৈধ আছে। কারিগরি কলেজের নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট সাবজেক্টে পড়াশোনাও আমার রয়েছে। যেসব অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে করা হচ্ছে তা সবই মিথ্যা।

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, দেড় বছর ধরে বারহাট্টায় আছি। আমি ওই কলেজের সভাপতি সেটা আজও কেউ জানায়নি। আমি নিজেও  তা জানি না। এতদিনেও কলেজের  কোন কাজের জন্যও  অধ্যক্ষ বা কোন শিক্ষক আমার কাছে আসেননি। কলেজের অধ্যক্ষ পদ নিয়ে ঝামেলা শুনেছি।  কিন্তু ওই কলেজের সভাপতি যে ইউএনও সেটা জানি না। তবে নন এমপিও কোন প্রতিষ্ঠানে ইউএনও সভাপতি থাকার কথা নয়। 





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]