ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪ আশ্বিন ১৪৩১
ই-পেপার শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ব্রেকিং নিউজ: নতুন কোনো ইটাভাটার অনুমতি নয়, ৩ হাজার ৪৯১ টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা      রাজধানীতে তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী      নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াতের নির্দেশে বেনাপোল বন্দর পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি      সাভার মডেল থানায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার বিরুদ্ধে আরো দুটি হত্যা মামলা      নেত্রকোনায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত      




ঢাবির হলে গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যু; আটক তিন
ঢাবি সংবাদদাতা
Published : Thursday, 19 September, 2024 at 6:58 PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে তোফাজ্জল নামে এক মানসীক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুয়েটের আবরার হত্যাকান্ডের পরে ফের শিক্ষার্থীদের হাতে এমন কোন হত্যাকান্ডের সাক্ষী হলো পুরো জাতি।  

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের পর প্রাথমিকভাবে জড়িত তিন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।তার মধ্যে একজনের নাম নিশ্চিত করেছেন প্রশাসন। গ্রেপ্তার হওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম জালাল আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী । এর আগে ওই শিক্ষার্থী হল ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িতো  বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন।

জানা যায়, গতকাল (বুধবার) ৮টার দিকে তাকে আটক করে হলের শিক্ষার্থীরা।  রাত ১২টার দিকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে রাত ২টার দিকে তার মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। জানা যায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক জালাল আহমেদসহ হলের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধর করছেন।

ভোর সাড়ে ৪টায় প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যান। সেখান থেকে পরে হল প্রাঙ্গণে এসে হলের পুরাতন ভবনের গেস্টরুম ও এক্সেসটেনশনের গেস্টরুম ঘুরে দেখেন। এই দুটি গেস্টরুমেই তোফাজ্জলকে মারা হয়। এসময় তিনি দুটি রুম সিলগালা করে দেন।

এদিকে এমন ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন ও  দুঃখ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় । আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীরকে আহ্বায়ক করে করা তদন্ত কমিটি একি দিন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, হলে গেস্টরুমে তোফাজ্জলকে স্ট্যেম্প-লাঠি দিয়ে আঘাত করছে শিক্ষার্থীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তোফাজ্জলকে মারার আগে প্রথম তাকে ভাত খাইতে দেওয়া হয় । এবং তাকে জিজ্ঞেস করা হয় হলের খাবার কেমন? এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিদ যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। পরে তাকে গেস্ট রুমে নিয়ে এক দফায় মারা হয়। আবার পানি খেতে দেওয়া হয়। পরে মধ্যযুগীয় কায়দায় তার উপর হামলা চালানো হয় ।

তোফাজ্জলের এক মামাতো বোন সংবাদ মাধ্যামে জানান, তোফাজ্জলকে ছাড়িয়ে নিতে তাদের কাছে ৩৫ হাজার টাকা দাবি করে অভিযুক্তরা। এ সময় তোফাজ্জল মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন এ বিষয়ে একাধিকবার বলা হলেও তারা তা শুনতে চায়নি।  

 বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দায়ের করা মামলার এজহারে বলা হয়, গতকাল রাত পৌনে ৮টায় ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে। পরে হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাথাড়ি চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। পরে ওই যুবক মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পেছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। কয়েকজন শিক্ষার্থী বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেল নিয়ে যায়।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পথচারী লোকজনদের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, অচেতন যুবকের নাম তোফাজ্জল ও সে একজন ভবঘুরে। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করে।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালেদ বলেন, হত্যার ঘটনায় এজাহার গ্রহণ করে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]