শিক্ষক ও ক্লাসরুম সংকটে স্থবির হয়ে পড়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম। বিভাগটিতে মোট ১২ জন শিক্ষকের মধ্যে ৭ জনই শিক্ষা ছুটিতে; দুইজনকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছে শিক্ষার্থীরা। ফলে বিভাগটিতে বর্তমান শিক্ষক রয়েছেন মাত্র তিনজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে ধার করা একটিমাত্র কক্ষে চলছে পাঁচটি ব্যাচের প্রায় সাড়ে তিনশ শিক্ষার্থীর পাঠদান কার্যক্রম। নেই সেমিনার লাইব্রেরির পর্যাপ্ত সুবিধা ও আলাদা ডিন অফিস। এ অবস্থায় বিভাগটিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র অনুষদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় আইন অনুষদ। প্রতিষ্ঠাকালে দ্রুত ভবন নির্মাণ করে বিভাগ স্থানান্তর করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের চতুর্থ তলায় একটিমাত্র শ্রেণিকক্ষ নিয়ে যাত্রা করে অনুষদটি৷ প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পার হলেও অবসান ঘটেনি সংকটের গড়ে ওঠেনি পূর্ণাঙ্গ একাডেমিক ভবন। একটি মাত্র কক্ষ দিয়েই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। অপর একটি কক্ষকে বিভাগীয় প্রধানের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। নেই ডিনের কক্ষ।
অনুষদ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের আগস্টে বিভাগের কার্যক্রম চালু হলেও কক্ষ সংকট থাকায় জহির রায়হান মিলনায়তনের ওপর একটি কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়। পরবর্তীতে কক্ষটিকে দু’ভাগ করে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে যা বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। ক্লাসরুমের অভাবে এক বর্ষের ক্লাস শেষ হওয়ার অপেক্ষায় অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সেমিনার লাইব্রেরির অভাবে আইনের গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স বইগুলোও সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি আইন বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের জন্য নেই কোনো মিটিং কক্ষ।
এ বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগের নবনিযুক্ত সভাপতি অধ্যাপক রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত শিক্ষক ও ক্লাসরুম না থাকায় আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ঠিকভাবে চালাতে পারছি না। যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হয়েছে, আমরা সেটি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় মানে একটা ক্লাসরুমের নিশ্চয়তা থাকা, একাডেমিক কার্যক্রমের সব সুযোগ-সুবিধা থাকা। সব অন্যায়-অবিচারের মধ্য দিয়ে জাবির আইন বিভাগ আজ ১৩ বছর পূর্ণ করেছে। তবে এখনো ভবন পায়নি আইন বিভাগ এবং বিভাগে তীব্র শিক্ষক সংকট। আমরা আশাকরি বিশ্ববিদ্যালয় এ সংকট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ১৪০০ কোটি টাকার অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান থাকলেও এতে আইন অনুষদের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই।