ময়মনসিংহ -জারিয়া রেলপথে, ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া গামী লোকাল ট্রেনে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ (১৮ সেপ্টেম্বর) বুধবার সকাল আনুমানিক ৬:১৫ মিনিটে ময়মনসিংহ সদরের কেওয়াটখালী ওভারব্রিজ এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ট্রেনে একটি বগি ডাকাতরা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে তাদের , নগদ টাকা, মোবাইল সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। ঐ বগির বেশির ভাগ যাত্রী পূর্বধলা উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও সরকারি-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী।
ডাকাতির ঘটনাটি তাৎক্ষণিক মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পূর্বধলা উপজেলা সদরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও ভূক্তভোগি যাত্রীরা সকাল পৌণে আটটার দিকে পূর্বধলা স্টেশনে প্রায় ঘন্টাখানেক ট্রেনটি অবরোধ করে রাখে।
ট্রেনে ডাকাতদের ছুরি-কাগাতে রক্তাক্ত, রাকিবুর রহমান (রাকিব) এর ভাগ্নে ফজলে রাব্বি (অমি) বলেন আব্বা অসুস্থ তাই ময়মনসিংহ থেকে আব্বা,আম্মা ও মামাকে নিয়ে পূর্বধলায় আসছিলাম হঠাৎ ডাকাতরা সবকিছু নিয়ে নেই ও আক্রমণ করে।
ভূক্তভোগি ট্রেনের যাত্রী, পূর্বধলা সরকারি জগৎমনি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শুধাংশু শেখর তালুকদার ও পূর্বধলা রাবেয়া মহিলা কলেজের সহকারি অধ্যাপক মো. খোশেদ আলী জানান, নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া ঝাঞ্জাইল স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত লোকাল ট্রেনটি নিয়মিত দিনে চারবার চলাচল করে। ট্রেনটি জারিয়া ট্রেন হিসেবেই পরিচিত।
সকাল ৬টার দিকে তারা ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে জারিয়াগামী ২৭২ নং ওই লোকাল ডাউন ট্রেনের ইঞ্জিনের সাথের বগিতে উঠেন। নগরের কেওয়াটখালী এলাকায় ডাকাতের কবলে পড়ে ট্রেনটি। এর আগেই ট্রেনের চালক ইঞ্জিনের গতি কিছুটা কমিয়ে এনে ঘটনাস্থলে ট্রেনটি থামিয়ে দেন। সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ৪ জনের একটি ডাকাতদল হাতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ট্রেনের ওই বগিতে উঠে যাত্রীদের জিম্মি করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মুঠোফোন, নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবার তারা ট্রেন থেকে নেমে পড়ে। এ সময় তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাকিবুর রহমান (৪২) নামের এক যাত্রী আহত হয়। যাত্রীদের অভিযোগ ট্রেনের চালক ও ড্রাইভারের যোগসাজসে এ রেল পথে প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আজকেও ইচ্ছে করেই ড্রাইভার ট্রেনটি থামিয়ে ছিল।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রেনের চালক (গার্ড) আব্দুল গফুর জানান এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ড্রাইভার তার ইচ্ছেমতো ট্রেন থামিয়ে অন্য এক ড্রাইভারকে নামিয়েছে।
অভিযুক্ত ট্রেনের ড্রাইভার আব্দুল হালিম জানান, ট্রেনটি রেলব্রিজে উঠার আগেই সাধারণত ট্রেনের গতি কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়। আর সে সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে ডাকাত দল।
এদিকে পূর্বধলা রেল স্টেশনে ট্রেন অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা নিবাহী অফিসার (ইউএনও) মো. খবিরুল আহসান ও সেনাবাহিনীর ৮ ইস্ট বেঙ্গলের অধিনে পূর্বধলা ক্যাম্পের দায়িত্বরত ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ শহিদুল উল্লাহ ভূঁইয়া তাদের হস্তক্ষেপে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।