চট্টগ্রাম মহানগরে থানাগুলোতে পুলিশী কার্যক্রম শুরু হলেও সেবা প্রার্র্থী নেই। সাদা পোশাকে পুলিশরা দায়িত্ব পালন করলেও আশেপাশে দেখা যায়নি কোনো সেবাপ্রার্থী। হয়নি কোনো ডায়েরি-মামলা। তবে ভিড় ছিল রাজনৈতিক নেতাকর্মীর। শনিবার এসব চিত্র দেখা গেছে নগরের কয়েকটি থানায়। সেখানেও ‘পাহারায়’ আছেন সেনাসদস্যরা। সাথে ছিলেন আনসার সদস্য। ছিলেন না কোনো সেবাপ্রার্থী।
এর আগে চারদিন বন্ধ থাকার পর থানাগুলোয় সেনা সদস্যদের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ডিউটিতে গত শুক্রবার যোগ দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। এদিকে গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালী থানা পরিষ্কার করছেন শিক্ষার্থীরা।শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট বিকেল থেকে চট্টগ্রামের অধিকাংশ থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় থানা-পুলিশের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি। অনেক জায়গায় অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নথি লুট হয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে।
সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, যেসব থানায় হামলা হয়নি বা কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।গত শুক্রবার চালু হওয়া ১১টি থানার মধ্যে রয়েছে চান্দগাঁও, বায়েজিদ বোস্তামী, খুলশী, পাঁচলাইশ, সদরঘাট, চকবাজার, বাকলিয়া, পাহাড়তলী, আকবরশাহ, কর্ণফুলী ও বন্দর। গতকাল শনিবার হালিশহর, কোতোয়ালী, ডবলমুরিং এবং ইপিজেড থানার নিউমুরিং ফাঁড়ির কার্যক্রম সীমিত পরিসরে শুরু হয়। তবে নগরীর দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত পতেঙ্গা থানার কার্যক্রম শুরুর জন্যে নতুন ভবন খোঁজা শুরু হয়েছে।
খুলশী থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার মূল ফটক দিয়ে প্রবেশমুখে দুজন সেনাসদস্য থানার নিরাপত্তায় রয়েছেন। এছাড়া সেখানে ছিলেন একজন আনসার সদস্য। আশেপাশে আরও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা সবাই সাদাপোশাকে। তখনো কোনো সেবাগ্রহীতাকে থানায় প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।
এদিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালী থানা পরিষ্কার করছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকাল দশটা থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কার্যক্রমে যোগ দেন। সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ওয়াহিদুল আলম কাদেরী বলেন, সকাল থেকে কোতোয়ালী থানায় পরিষ্কার করতে কাজ শুরু করেছি। আমরা ১৭ জন শিক্ষার্থী কাজ করছি।
সরকারি সিটি কলেজের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কলেজের বন্ধুদের নিয়ে থানা পরিষ্কারের কাজ করছি। সেবাপ্রার্থীদের থানায় আসার অনুক‚ল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই।
সরেজমিন দেখা যায়, ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী দলে দলে পুরো থানা প্রাঙ্গণ পরিষ্কারের কাজ করছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা গাড়িতে তুলে আবর্জনা নিয়ে যায়। তাদের সহযোগিতা করতে দায়িত্বে আছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এছাড়াও থানায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও কোতোয়ালী থানা জামায়াতের সেক্রেটারি মোস্তাক আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরাও থানা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার কাজে সহযোগিতা করছেন।