লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার ভূলুয়া নদীর বিভিন্ন অংশে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ ও নদী ভরাট করে দেওয়া সকল বাঁধ কেটে দিয়েছে প্রশাসন। ১২ আগস্ট (সোমবার) সারাদিন উপজেলা নির্বাহি অফিসারের নেতৃত্বে উপজেলার ভূলুয়া নদীর চর রমিজ, চরপোড়াগাছা, চরবাদাম ইউয়িনের বিভিন্ন পয়েন্টে এবং তৎসলগ্ন বিভিন্ন খালে দেওয়া বাঁধ এবং যেসব পাঁতা জালে পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হয় এমন সব জাল অপসারণ করা হয়েছে। এছাড়াও আগামী কয়েকদিনে চরগাজী ইউনিয়নের আওতায় থাকা বাঁধগুলোও অপসারনের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
বাঁধ কেটে দেওয়ায় টানা বৃষ্টি ও মেঘনা নদীর জোয়ারের পানিতে তৈরি হওয়া জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেয়েছে উপজেলার অন্তত ৩৫হাজার মানুষ। এর আগে গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে নদী তীরবর্তী বহু ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যায়। পাশাপাশি শত শত পুকুরের মাছ ভেসে যায়। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের কথা বিবেচনা করে রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আমজাদ হোসেন উপস্থিত থেকে কমলনগর উপজেলার ইউএনও সুচিত্র রঞ্জন দাস এবং কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহসহ স্থানীয়দের সহায়তায় এসব এসব বাঁধ কেটে দেওয়া হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তিনটি ইউনিয়নের ভূলুয়া নদীতে ব্যক্তি মালিকানাধীন অবৈধ বাঁধগুলো কেটে দেওয়ার ফলে উপজেলা প্রায় ৮হাজার হেক্টর জমির আমন ধান ও বিভিন্ন ফসল জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে। এর আওয়তায় প্রায় ৩৫হাজার মানুষ উপকৃত হবে। কৃষি অফিস থেকে আরও জানা যায়, রামগতি উপজেলার পাশর্^বর্তী উপজেলা সূবর্ণচর উপজেলা প্রশাসনের সাথে ইতিমধ্যে কথা হয়েছে। ভূলুয়া নদীর নোয়াখালীর সূবর্ণচর উপজেলার আওতায় থাকা সীমানায়ও বেশ কয়েকটি বাঁধ রয়েছে। আগামী কয়েকদিনে সেসব বাঁধগুলোও অপসারনের কাজ করা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক জানান, অতিবৃষ্টিতে কৃষক ও তাদের ফসলের জলাবদ্ধতাজনিত ক্ষতি কমাতে নদীতে দেওয়া অবৈধ বাঁধগুলো প্রশাসনের সহায়তা অপসারণ করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া পুরো বর্ষা মৌসুমে অব্যাহত থাকবে যাতে কৃষক বা কোন সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হন।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, ভূলুয়া নদীটি এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী একটি নদী। রামগতি ও কমলনগর উপজেলার উপর দিয়েই বয়ে গেছে এই নদী। নদীর মাঝখানে বিভিন্ন স্থানে জাল ও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় দুই উপজেলার প্রায় ৪০হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়ে। তাই রামগতি ও কমলনগর উপজেলা প্রসাশন যৌথভাবে উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এসব বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ সৃষ্টি করা হয়েছে। আশাকরি এখন থেকে তেমন জলাবদ্ধতা আর হবেনা।