নাটোরের পাখি-বন্যপ্রাণী নিধন বন্ধে ব্যাপক প্রচারণা চলছে
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৬:৪৬ পিএম (ভিজিটর : ২৩০)
নাটোরের বিভিন্ন এলাকায়”সবুজ বাংলা”পক্ষ থেকে চলছে, লিফলেট বিতরণ,মাইকি ও বিভিন্ন হাটে-বাজারে, স্কুল-কলেজের আশপাশসহ জনগুরুর্পূণ স্থানে বন্যপ্রাণী ও পাখিদের নিরাপত্তা বিষয়ক সাইনবোর্ড স্থাপন করে চলছে, প্রচার প্রচারণা। জনসাধারণের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে ব্যাপক সাড়া। বন্ধুক দিয়ে, ফাঁদ পেতে, অথবা গাছে চড়ে পাখি শিকারীদের দৌরাত্যেœ আমাদের পরিবেশ থেকে হারিয়ে গেছে নানান জাতের পাখি। তবে সরকারের কঠোর নীতির কারনে পাখি শিকার সম্পূন্ন রুপে অবৈধ ঘোষনার ফলে এখন অনেকটাই কমেছে। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ হয়নি এখনও। কখনও কখনও গোপনে আবার কখনও প্রকাশ্যে চলছে পাখি শিকার । এতে করে এখনও পরিবেশ পাখিদের বিচরণ নিরাপদ নয়। এই যখন অবস্থা তখন, বন্যপ্রাণী ও পাখি নিধন বন্ধে নাটোরে ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা শুরু করেছে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন”সবুজ বাংলা”। শীতকাল ইতিমধ্যে নাটোরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা মিলছে অতিধি পাখিদের। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে, শিকারীদের দৌরাত্ব্যে, চলছে নির্বিচারে পাখি নিধন। এই যখন অবস্থা তখন জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে, বাংলাদেশে প্রায় ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৭১৮ প্রজাতির পাখি, ১৫৭ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৪২ প্রজাতির উভচরসহ সর্বমোট ১০৪২ প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। কিন্তু আমাদেও অঙ্গতা, অসচেতনতা, অদূরদর্শীতা কর্মকান্ডের ফলে বন্যপ্রাণী ও এদের আবাসস্থল হুমকির মুখে। ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ থেকে ১৪ প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং অসংথ্য বন্যপ্রাণী আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকার বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ পাস করেছে। এ আইনে -পাখি শিকার, হত্যা,আটক ও ক্রয় বিক্রয় দন্ডনীয় অপরাধ যার সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছর কারাদন্ড এবং ২ লক্ষ টাকা জরিমানা। বন্যপ্রাণী আটক, হত্যা,আটক ও ক্রয় বিক্রয় দন্ডনীয় অপরাধ যার সর্বোচ্চ শাস্তি ১২ বছর কারাদন্ড এবং ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। যা অনেকে জানেনও না,আবার অনেকে জেনেও তা মানেন না। এ দিকে নির্বিচারে শিকারের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে অসংখ্য বন্যপ্রাণী। নাটোর জেলাকে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল ঘোষণার লক্ষে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “সবুজ বাংলা”। সংগঠনের পক্ষ থেকে নাটোরে চলছে পাখি ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে সচেনতা সৃষ্টি, আটক দেশীয় প্রজাতির পাখি উদ্ধার, চিকিৎসা ও অবমুক্তর পাশাপাশি পাখিদের কৃত্রিম বাসা তৈরির কাজ। বিভিন্ন স্থানে পাখিদের বাস উপযোগী নতুন প্রযুক্তিতে তৈরি গাছে গাছে শত,শত মাটির হাঁড়ী বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় পাখিদের আনাগোনা বাড়াতে প্রতিদিন দানা জাতীয় খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। পাখিদের বাসযোগ্য বৃক্ষ নিধন, খাদ্য সংকট, কৃষি ক্ষেতে অতিরিক্ত সার-কীটনাশক প্রয়োগ, প্রাকৃতকি দূযোগ, শিকারিদের তান্ডব বেড়ে যাওয়ায় নাটোরের দিনদিন কমতে শুরু করেছে দেশীয় প্রজাতির পাখির সংখ্যা। তাই বন্যপ্রাণী রক্ষায় ব্যাতিক্রমী কার্যকম শুরু করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন”সবুজ বাংলা”। ইতিমধ্যে পাখি সংরক্ষনে অংশ নিতে শুরু করেছে অসংখ্য তরুন। ইতিমধ্যে পাখি সংরক্ষনে অংশ নিতে শুরু করেছে অসংখ্য তরুন। সংগঠনের উদ্যোগে পাখি সংরক্ষনে গ্রামে গ্রামে ছোট,বড় সবাইকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে মিনি টিম। সংগঠনের প্রতিষ্টা ও সাধারন সম্পাদক ফজলে রাব্বী বলেন,সকলের মনমানষিকতা পরিবর্তনের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছি আমরা। সংগঠনের উদ্যোক্তা ফজলে রাব্বী বলেন, এখনই সময় এসেছে বন্যপাখিদের রক্ষার, এখন ব্যবস্থা গ্রহন না করলে, ভবিষ্যতে দেশীয় পাখি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে, শুধু পাখিই না, সকল বন্যপ্রাণী আমাদের দেশেরই সম্পদ। তাদের সংরক্ষন, নিরাপত্তা প্রদান আপনার, আমার সকলেরই দায়িত্ব। আশা করছি বন্যপ্রাণী ও পাখি নিধন বন্ধে এই উদ্যোগ সফল হবে।
এম এম আরিফুল ইসলাম (সাংবাদিক), নাটোর।