ই-পেপার বাংলা কনভার্টার রবিবার ● ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার রবিবার ● ২৭ এপ্রিল ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




বরগুনা ভাড়ানি খাল বাচঁলে বাচবে পৌর শহর
বরগুনা জেলা সংবাদাতাঃ
প্রকাশ: শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৬:০০ পিএম  (ভিজিটর : ৬৫)
বরগুনা বরগুনা শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথ ভাড়ানি খাল। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এখনো প্রবাহমান এই খালটি, যা শহরের পরিবেশ ও নৌ-যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরগুনা পৌরসভার সদিচ্ছাই পারে খালটিকে নতুন রূপ দিতে। কিন্তু দিন-দিন দখল, দূষণ ও অবহেলার কারণে খালটি সংকুচিত হচ্ছে।

এই খালের দুই পাশে নতুন করে দখল হচ্ছে, পাশাপাশি বাসাবাড়ি ও দোকানের বর্জ্য খালে ফেলা হচ্ছে। এতে করে খালের পানি দূষিত হচ্ছে এবং চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বরগুনার সচেতন মহল বলছে, পৌরসভা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে খালটির পুরো সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খাল দখল ও দূষণ শুধু নৌপথের সমস্যা নয়, এটি পরিবেশের জন্যও ভয়াবহ। খাল শুকিয়ে গেলে শহরের জলাবদ্ধতা বাড়বে এবং স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বরগুনার মানুষ এখন অপেক্ষা করছে পৌরসভার কার্যকর পদক্ষেপের জন্য, যাতে ভাড়ানি খাল আবারও তার প্রাণ ফিরে পায় এবং শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় থাকে।

২০১৯ সালে আদালতের নির্দেশে খালের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের প্রায় ১৫০টিরও বেশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এই খালটি বরগুনার খাকদোন নদী থেকে পায়রা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত, যা স্থানীয়ভাবে ভাড়ানি খাল নামে পরিচিত। শহরের প্রধান বাজারের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা এই খালটির দুই পাশে বহু বছর ধরে প্রায় ১৫০টির বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। ফলে খালটি সংকুচিত হয়ে একসময় নৌযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।  

২০১৮ সালে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) উচ্চ আদালতে একটি মামলা করে। পরে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট খালের দুই পাশে দুই কিলোমিটার এলাকার দখল উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ অনুসারে জেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে খালটি দখলমুক্ত করে।

স্থানীয় এক মুরগি ব্যবসায়ী জানান, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দোকানের বর্জ্য নিতে টাকা দিতে হয় তাই টাকা বাঁচাতে আমরা দোকানের সারা দিনের মুরগির লোম ও পানি কাঁচা বাজার ব্রিজের উপর থেকে নদীতে ফালাই। এতে করে আমাদের টাকা বেঁচে যায়। আজকের আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম এটা আমাদের কতটা ক্ষতি করে। এরপর থেকে আমি আর নদীতে দোকানের ময়লা আবর্জনা ফালাবো না।

স্থানীয় পরিবেশ কর্মী আরিফ রহমান বলেন, ভাড়ানি খাল একসময় খরস্রোতা ও ব্যস্ততাপূর্ণ জলপথ ছিল। এ খালের মাধ্যমে পঁচাকোড়ালিয়া, তালতলী, চালিতাতলী, বালিয়াতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় পণ্য ও যাত্রী পরিবহন হতো। দখলদারদের কারণে খালটি আজ চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে দখলমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। নদী ও খাল বাঁচাতে হবে আমাদের।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বরগুবা জেলা শাখার সভাপতি মুশফিক আরিফ বলেন,আমরা বহুদিন ধরে খালটি দখলমুক্ত করার জন্য আন্দোলন করেছি। শেষ পর্যন্ত আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে খালটি গত বছর একাংশ মুক্ত হয়েছে, যা আমাদের বড় প্রাপ্তি। 

তবে নতুন করে আবার দখল ও দূষণের কবলে পড়েছে খালটি। খালের দুই পাশের ছোট ছোট ঔষধি গাছগুলো এখন ময়লার ভাগাড়ে চাপা পড়েছে। স্থানীয় দোকানদার ও পরিছন্নতা কর্মীদের সচেতন করে দখল ও দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, নদীর তীর গেসেই গড়ে উঠেছে বরগুনা শহর আর এই শহরের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় বিক্রয়ের সহজ রুট হিসাবে ব্যবহার করা হয় নৌযান। এমনকি শহরের দৈনন্দিন ব্যবহৃত পানি উৎস এই খালটি।  স্থানীয়দের কাছে খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সবার নিতে হবে। এছাড়াও বরগুনার অন্যান্য দখল হওয়া খালগুলোও একইভাবে দখলমুক্ত করা হবে।

বরগুনা স্বাস্থ্য অধিকার জেলা ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা  বলেন, ময়লা নির্দিষ্ট জায়গায় না ফেলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা যেমন, মুরগি, কাঁচাবাজার, মাছ বাজার ও খালের পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য এই খালে ফেলার কারণে পানি দূষণ হয়। 

হাজার হাজার পরিবার এই পানি ব্যবহার করে তাদের পরিবারের রান্না থেকে শুরু করে গোসল সাধারণত গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করে থাকে। এতে তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই দূষণের হাত থেকে নদীকে রক্ষা করতে সচেতনার বিকল্প নেই।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]