ই-পেপার বাংলা কনভার্টার রবিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৫ ৭ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার রবিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




স্বামী হত্যার মামলা করে ছেলে-মেয়ে নিয়ে স্বামীর বাড়ী ছাড়া স্ত্রী রিমা আক্তার
শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
প্রকাশ: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ২:১৭ পিএম  (ভিজিটর : ৪৪)
প্রবাস ফেরত স্বামী আকরাম হোসেন হত্যার বিচার চেয়ে পাঁচ মাস যাবত পুলিশ, র‌্যাব ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন হতভাগ্য স্ত্রী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের রিমা আক্তার। 

স্বামী হত্যার মামলা করে আসামীদের হুমকিতে ছেলে-মেয়ে নিয়ে স্বামীর বাড়ী ছেড়ে বাবার বাড়ীতে বসবাস করছেন স্ত্রী। তাদের হুমকিতে ছেলে-মেয়ে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। সঠিক তদন্ততের মাধ্যমে হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আদালতে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়ার দাবি জানান। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সাংবাদিকেদর সাথে আলাপকালে তিনি এ দাবী জানান।

ভুক্তভোগী আকরাম হোসেন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার নলী পলাশ গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে। সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরানের জন্য তিনি দীর্ঘদিন যাবত প্রবাস জীবন যাপন করেছেন। হত্যার প্রায় তিন বছর আগে তিনি গ্রামের বাড়ী কাপাসিয়ার নলী পলাশ গ্রামে জমি কিনে বাড়ী নির্মাণ করে স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে বসবাস করছিলেন।

মামলার আসামীরা হলো পাশের বরুন গ্রামের সিরাজ উদ্দিন (৬৫), রাজু (৪৫) এবং ইসমাইল (৫৫), আজিজুল ইসলাম (৪০), রাজুর ছেলে শারিকুল (৩৫), ভবনেরচালা গ্রামের আতিকুল ইসলাম আতিক (৪৫), নলী পলাশ গ্রামের নূরুল ইসলাম (৫৪) এবং শৈলন্দ্র চন্দ্র মল্লিক (২৮)। তাদের মধ্যে আতিক, নূরুল ইসলাম এবং শৈলন্দ্র চন্দ্র মল্লিক স্বামীর বসত ভিটায় এসে আমাকেসহ ছেলেমেয়েদেরকে খুন করার হুমকি দেয়।

রিমা আক্তার বলেন, ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর তার স্বামী রাত সাড়ে ৮টায় বাড়ীর পাশে কিত্তনখোলা বিলে মাছ ধরার জন্য পাতানো জাল দেখতে যায়। রাত গভীর হলেও তিনি বাড়ীতে না আসায় ভাসুর দেলোয়ার (৫০) এবং চাচা শ্বশুর সফিকুল সফি (৬৫) আমার স্বামীকে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে পায়নি। 

পরদিন ১০ নভেম্বর সকাল ১০ টায় খবর পাই আমার স্বামীর লাশ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অবস্থায় বরুন বিলে ইসমাইলের ক্ষেতে পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামীর মরদেহ দেখতে পাই। তিনি দাবী করেন তার স্বামীর মৃত্যু রহস্যজনক। তার সঙ্গে পাশের বরুন গ্রামের সিরাজ উদ্দিন, রাজু এবং ইসমাইলের জমি সংক্রান্ত মতবিরোধ ছিল। 

সিরাজ উদ্দিনের পরিকল্পনায় রাজু, ইসমাইল এবং তাদের সহযোগীরা আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। রাতের আঁধারে হত্যা করে লাশ জমিতে পুঁতে রাখে আসামীরা। মাদ্রাসা পড়–য়া বড় মেয়ে আমাকে প্রশ্ন করে-বাবার হত্যাকারীরা জনসম্মুখে এখনো কীভাবে ঘোরাফেরা করছে। আসামীরা হুমকি দিচ্ছে আমার স্বামীর পথে আমাকেও যেতে হবে। তাদের অব্যাহত হুমকিতে আমি সন্তানদের নিয়ে ভয়ে আছি এবং তাদেরকে নিয়ে ছয় মাস যাবত স্বামীর বাড়ী ছেড়ে বাবার বাড়ীতে থাকতে হচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা ভয়ে স্কুল, মাদ্রাসায় যেতে পারছে না। তাদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার পথে। 

আসামীরা হুমকি দিয়েছিলেন দুই কোটি টাকা লাগলেও বাড়ী থেকে সরিয়ে দিবে এবং পায়ের নিচে মাটি রাখবে না। স্বামীর কষ্টার্জিত টাকায় কেনা জমি ও বাড়ী দখলের জন্য দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টা করে আসছিল। এর জেরেই আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বরুন বিলে ইসমাইলের ক্ষেতের চারপাশে জিআই তার স্থাপন করে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখে। ক্ষেতের পানিতে নামার পর রাতের আঁধারে আমার স্বামীকে তারা শরীরের সাত স্থানে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করে লাশ জমিতেই পুঁতে রাখে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে আমার স্বামীকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়।

কাপাসিয়া থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ না করে বাদীকে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে তিনি গাজীপুর আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়।

আসামীদের মধ্যে নূরুল ইসলাম বলেন, আকরাম হোসেনের বাড়ীর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার সময় এক হাত ছেড়ে দিয়ে প্রাচীর নির্মাণ করার জন্য বলেছিলাম। সে জমিতে মাছ ধরার জন্য গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। আমাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাপাসিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন বলেন, নিহত আকরাম হোসেনের স্ত্রীর দায়ের করা মামলাটি চলমান রয়েছে। আসামিরা গাজীপুরের বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে যত দ্রুত সম্ভব আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) জমা দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর বাড়ীর পাশে কিত্তনখোলা বিলে মাছ ধরার জন্য পাতানো জাল দেখতে যায় আকরাম হোসেন। পরদিন সকাল ১০ টায় বরুন বিলে ইসমাইলের ক্ষেতে পোঁতা অবস্থায় তার লাশ পাওযা যায়।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]