প্রকাশ: বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১:০০ পিএম (ভিজিটর : ৮৬৫)
দশ বছর আগে ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভেটেরিনারি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে রাত ৮ টার দিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়টির বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাকারিয়া ও কৃষি বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান মিল্টন।
খুনের ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলায় ৪১ জনকে আসামি করা হয়। একইসঙ্গে কোতোয়ালি থানার এসআই আব্দুল নুর বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত মিল্টনের চাচা মকসুদার রহমান বাদী হয়ে ৩৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলার এক নম্বর আসামি তখনকার উপাচার্য প্রফেসর মো. রুহুল আমিন। ২০১৯ সালের মার্চে মামলাগুলো পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডিতে) স্থানান্তরিত হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা তিনটি মামলার কাজ চলমান রয়েছে।
দীর্ঘ ৫ বছরেও মামলার কোনও কুল-কিনারা না হওয়ায় ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে দুই নিহত ছাত্রলীগ নেতা জাকারিয়া ও মাহমুদুল হাসান মিল্টনের বাবা-মা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছেলে হারা দুই পরিবারের বাবা-মাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিকভাবে সহায়তাসহ সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন।
তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির ওসি রমজান আলী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৬ জনের বিরুদ্ধে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের-১ (সদর)-এ চার্জশিট দাখিল করেন।
২০২০ সালের ৫ অক্টোবর দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি-১ (সদর) আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিশির কুমার বসু তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন।
হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পেরিয়েছে। তবে শেষ হয়নি মামলার বিচার কাজ। দীর্ঘ সময় ধরে ধীর গতিতে আগাচ্ছে বিচার কার্যক্রম। এদিকে সন্তান হারানোর কষ্ট এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে পরিবার দুটি। থামেনি আহাজারি।
জাকারিয়া এবং মিল্টনের স্বজনেরা জানিয়েছেন, দুইটি ভবিষ্যৎ অকালে ঝরে পড়লো, তারচেয়ে বড় কথা মায়ের বুক খালি হয়েছে। পরিবার দুটি এখনো সন্তানের জন্য হুহু করে কেঁদে ওঠে। জাকারিয়া আর মিল্টনের হাস্যোজ্জল চেহারা এখনো চোখে ভাসে। তারা বলেন, এ ধরণের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য সকলের সচেতন থাকতে হবে।