কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ও গ্রিন কার্ডধারী মোহসেন মাহদাওয়িকে সোমবার ফেডারেল এজেন্টরা গ্রেপ্তার করেছে, যখন তিনি ভারমন্টের একটি অভিবাসন অফিসে নাগরিকত্ব সাক্ষাৎকারে অংশ নিচ্ছিলেন।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র সুরক্ষা বিভাগ (ডিএইচএস)-এর এজেন্টরা কোলচেস্টার শহরে তাকে গ্রেপ্তার করে। মাহদাওয়ি গত বসন্তে ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং তিনি এই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত আরও একাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে সর্বশেষ যাকে টার্গেট করা হলো। এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া প্রথম ও সবচেয়ে পরিচিত বিদেশি ছাত্র ছিলেন মাহমুদ খালিল, তিনিও কলম্বিয়ার ছাত্র।
মাহদাওয়ির আইনজীবী লুনা দ্রুবি বলেন, 'ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তার স্পষ্ট অবস্থান ও তার জাতিগত পরিচয়ের কারণে তাকে আটক করা হয়েছে। এটি গাজায় চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার একটি অপচেষ্টা। একই সঙ্গে এটি অসাংবিধানিক।'
আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, একটি প্রো-ইসরায়েলি সংগঠন "বেতার ইউএস" মাহদাওয়িকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে, “ভিসাধারী মোহসেন মাহদাওয়ি আমাদের ডিপোর্ট তালিকায় রয়েছেন।'
এ বিষয়ে ডিএইচএস বা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করেনি। তবে মামলার বিচারক জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত মাহদাওয়িকে বহিষ্কার করা যাবে না।
মার্কিন সরকার মাহদাওয়ির বিরুদ্ধে অভিবাসন আইনের একটি ধারার প্রয়োগ করছে, যেখানে বলা হয়েছে, যদি কোনো বিদেশির কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে, তবে তাকে বহিষ্কার করা যেতে পারে। ঠিক একই আইনি যুক্তিতে মাহমুদ খালিলের বিরুদ্ধে বহিষ্কার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
তবে মানবাধিকার কর্মীদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ আসলে ইসরায়েলের সমালোচকদের লক্ষ্য করেই নেওয়া হচ্ছে, যারা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
একটি পুরোনো সাক্ষাৎকারে মাহদাওয়ি বলেন, এক বিক্ষোভে এক ব্যক্তি 'ইহুদিদের মৃত্যু হোক” বলে স্লোগান দিলে তারা সরাসরি ওই ব্যক্তিকে বলে, “তুমি আমাদের প্রতিনিধিত্ব করো না।” মাহদাওয়ি আরও বলেন, “ইহুদিবিদ্বেষ হচ্ছে অন্যায়ের সমর্থন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই—এই দুটি পরস্পর সংযুক্ত। কারণ, যেকোনো জায়গায় ন্যায়বিচারের হুমকি, সর্বত্র ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি।'