ই-পেপার বাংলা কনভার্টার রবিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৫ ৭ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার রবিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




বিলুপ্তির পথে মহেশখালীর ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প
মহেশখালী (কক্সবাজার) সংবাদদাতা
প্রকাশ: শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ৫:৪৮ পিএম  (ভিজিটর : ১২৪)
কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রায় বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প। এক সময় মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বাঁশ ও বেতের ব্যবহার প্রচুর থাকলেও বর্তমানে এর ব্যবহার নাই বললেই চলে। দ্বীপাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবনের নানা কাজে আবহমান কাল থেকে বাঁশ ও বেতের ব্যবহার চলে আসছে। উপজেলার পাহাড়ী এলাকায় বাঁশ ও বেতের উৎপাদন থাকায় গ্রামীণ জনপদের নিম্ন আয়ের মানুষ যারা কাঠ, টিন অথবা ইটের তৈরি ঘর বাড়ি তৈরী করতে পারতোনা তারা বাঁশের তৈরি ঘরবাড়ী থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় গৃহস্থালী কাজের উপকরণ ডালি, কুলা, চালনা থেকে শুরু করে মাছ ধরার ডারকি, পলুই তৈরী সহ বিভিন্ন কাজে বাঁশের ব্যবহার করতো।

উপজেলার কালারমারছড়া, হোয়ানক, ছোট মহেশখালী, শাপলাপুর ও বড়মহেশখালী ইউনিয়নের একটি অংশ বাঁশ ও বেতের সাহায্যে পন্য সামগ্রী তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব গ্রামের লোকেরা রাস্তার ধারে, বাড়ী আঙ্গিনায় বাঁশের চটা দিয়ে চাটাই, কুলা, ডালা, চাঙ্গারী, চালান, মাছ রাখার খালই, ঝুড়ি, মোড়া, ঝাকা, মুরগির খাঁচা সহ বিভিন্ন জিনিস পত্র তৈরির কাজ করত। তাদের পাশাপাশি গৃহিনীরাও রান্না-বান্না ও ঘরের কাজ শেষে এসব তৈরিতে যোগ দিত। তৈরি সামগ্রী গ্রামে গ্রামে ফেরী ও এলাকার বাজারে বিক্রি হত। চাহিদা বেশি থাকায় এ শিল্পের সাথে জড়িতদের জীবিকার জন্য অন্য কোন পেশার প্রয়োজন ছিল না। এখনো উপজেলার নতুনবাজার, টাইমবাজার, কালারমারছড়া বাজার, শাপলাপুর বাজার, ছোট মহেশখালী লম্বাঘোনা বাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের তৈরী স্বল্প পরিমানে শৌখিন জিনিসপত্র বিক্রির দৃশ্য চোখে পড়ে।

উপজেলার একাদিক কুটির শিল্পীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে প্লাষ্টিক সামগ্রীর সহজলভ্যতা, শিল্পীদের দারিদ্রতার কারণে পুঁজির অভাব এবং বাঁশ ও বেতের তৈরী পন্যের ন্যায্য মূল্যের অভাবে মহেশখালীর বাঁশ ও বেত শিল্প বিলুপ্ত হওয়ার পথে। ফলে এ শিল্পের সাথে জড়িত লোকজন বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়ছে।

এ শিল্পের সাথে জড়িত হোয়ানকের আলী আহমদ জানান, বর্তমানে বাঁশের মূল্য বৃদ্ধির ফলে নিরূপায় হয়ে বহু কষ্টে লোকসান হওয়ার পরেও সবাই মিলে পৈত্রিক পেশা হিসেবে এ শিল্প ধরে রেখেছেন। শত প্রতিকূলতার মধ্যে বাঁশ শিল্পিরা তাদের পৈত্রিক পেশা ধরে রাখতে চান। বিদেশেও বাঁশের তৈরি সৌখিন জিনিসপত্রের অনেক কদর আছে। সরকার এসব শিল্পীদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা এবং স্বল্প মূল্যে কারিগরি উপকরণ সরবরাহ করলে বাঁশ ও বেত শিল্পীরাও দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে।

কালারমারছড়া ইউনিয়নের সালেহ আহমদ বলেন, বর্তমানে স্বল্প দামে প্লাস্টিক সামগ্রী পাওয়ায় কুটির শিল্পের চাহিদা তেমন নেই। তাছাড়া ও দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এ শিল্পের কাঁচামাল বাঁশ ও বেত। এখন আগের মতো বাড়ির আশেপাশে বাঁশ ও বেত গাছ রাখছে না কেউ। সেগুলো কেটে বিভিন্ন চাষাবাদসহ ঘরবাড়ি তৈরি করছে মানুষ। তাই কাঁচামাল আর আগের মতো সহজে পাওয়া যায় না। তাইতো এ শিল্পের কোন ভবিষ্যৎ দেখছি না।

বড় মহেশখালীর আক্তার কামাল জানান, সরকার ‘কুটির শিল্প’র সাথে জড়িতদের সহজে স্বল্প সুদে ঋনের ব্যবস্থা করলে ধ্বংসের হাত থেকে এ শিল্পকে রক্ষা করা সম্ভব। তা না হলে অচিরেই এ শিল্প চিরতরে হারিয়ে যাবে।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]