প্রকাশ: বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৩:৩৮ পিএম (ভিজিটর : ১২৩)

প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে মাঠে এলেন কিছু দর্শক। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে তারা মাতিয়ে রাখলেন গ্যালারি। মাঠে এর একদমই প্রভাব পড়ল না, ম্যাড়ম্যাড়ে ফুটবল খেলল আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের রং আরও ফিকে হয়ে গেল আবাহনীর আসাদুজ্জামান বাবলুর লাল কার্ডে। দ্বিতীয়ার্ধে এগিয়ে গিয়েও জিততে পারল না কিংস। শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতা ফেরাল আবাহনী। এরপর রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকারে জিতে ফাইনালেও উঠে গেল আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। কুমিল্লা ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে গতকাল মঙ্গলবার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতেছে আবাহনী। প্রথম কোয়ালিফায়ারে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়। টাইব্রেকারে আবাহনীর জাফর ইকবালের শট আটকান আনিসুর রহমান জিকো, কিন্তু তিনি পরে পরাস্ত হন রাফায়েল আগুস্তো, এমেকা, সবুজ, মোহাম্মদ ইব্রাহিমের কাছে। অন্যদিকে টাইব্রেকারে জালের দেখা পান কিংসের জোনাথন ফের্নান্দেস, শেখ মোরসালিন। রাব্বি হোসেন রাহুলের তৃতীয় শট ডান দিক ঝাঁপিয়ে আটকান মিতুল। এরপর দেসিয়েলের শট উড়ে যায় পোস্টের উপর দিয়ে; কিংসের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা তিক্তই হল এই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের জন্য। প্রিমিয়ার লিগে গত ডিসেম্বরের দ্বৈরথে বসুন্ধরা কিংসকে এ মাঠেই হারিয়েছিল আবাহনী, যেটা ছিল তাদের বিপক্ষে আকাশি-নীল জার্সিধারীদের প্রথম জয়। সেই সুখস্মৃতির পুনরাবৃত্তি করল মারুফুল হকের দল।
ঘাড়ের চোটের কারণে রক্ষণে কিংস পায়নি কাজী তারিক রায়হানকে। চোট কাটিয়ে ফেরা আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড হুয়ান এদুয়ার্দো লেসকানোকেও শুরুর একাদশে রাখার ঝুঁকি নেননি কোচ ভালেরি তিতে। তাতে কিংসের আক্রমণে ছিল না চেনা ধার। প্রচন্ড গরমে দুই দলে খেলতে পারেনি নিজেদের স্বাভাবিক ফুটবল। ২৮তম মিনিটে প্রথম কুলিং ব্রেকের আগ পর্যন্ত তেমন কোনো আক্রমণ, পাল্টা-আক্রমণ দেখা যায়নি। শুরু থেকে নিজেদের শক্তির জায়গা রক্ষণের চাদরে মুড়ে থাকে আবাহনী। চোট জর্জর কিংস যা একটু চেষ্টা করেও তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ষোড়শ মিনিটে প্রথম সুযোগ তৈরি করে কিংস। জোনাথন ফের্নান্দেসের ফ্রি কিকে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দেসিয়েল এলিস দস সান্তোসের হেড আটকে আবাহনীর ত্রাতা গোলকিপার মিতুল মারমা। কুলিং ব্রেকের পর আক্রমণের ধার বাড়ায় কিংস, কিন্তু মিতুলের বিশ্বস্ত দেয়ালে চিড় ধরাতে পারেনি তারা।
৩৭তম মিনিটে রাকিব হোসেনের আড়াআড়ি ক্রস গোলমুখে পান ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, কিন্তু মিতুল ঝাঁপিয়ে ফেরান। এরপর মজিবুর রহমান জনির কোনাকুনি শট যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৪২তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় আবাহনী। ফাহিমকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন বাবলু। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় পানির গ্লাস মাটিতে ছুঁড়ে নিজের উপরই হতাশা ঝাড়েন এই ডিফেন্ডার। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ায় রক্ষণের শক্তি বাড়াতে মিডফিল্ডার রবিউল হাসানকে তুলে ডিফেন্ডার শাকিল হোসেনকে নামান আবাহনী কোচ মারুফুল। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দুরূহ কোণ থেকে জনির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে সমতার স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যায় আবাহনী।