ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শনিবার ● ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ৫ মাঘ ১৪৩১
ই-পেপার শনিবার ● ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




বকেয়া গ্যাস বিল পরিশোধে বিদেশী কোম্পানিগুলো চাপ দিচ্ছে
কাজী আব্দুল হান্নান
প্রকাশ: শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:২২ এএম  (ভিজিটর : ৩২)

গ্যাস বিলের বকেয়া পরিশোধে চাপ দিচ্ছে বিদেশী তেল কোম্পানিগুলো। বকেয়ার কারণে এই খাতে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ৭৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার জন্য চিঠি দিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশ। বর্তমানে তাদের প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পড়েছে বলে জানা গেছে। শেভরনের পাশাপাশি কাতার সরকারও বকেয়া পরিশোধের জন্য তাগাদা দিয়েছে। জিটুজি ভিত্তিতে কাতার থেকে বছরে ৪০ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়। 
গত ৯ জানুয়ারি কোম্পানিটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিবের দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানাগেছে, চিঠিতে বকেয়া পরিশোধে সচিবের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। কত বকেয়া রয়েছে সে সম্পর্কে শেভরন বাংলাদেশ মুখ খুলছে না। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে ম্যানেজার (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ জাহিদুর রহমান চিঠির প্রসঙ্গে কোন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি ফাইন্যান্সিয়াল এন্ড কোম্পানির পলিসি ইস্যু, যা প্রকাশযোগ্য নয়। 

শেভরন বাংলাদেশ বকেয়ার পরিমাণ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অর্থ) একেএম মিজানুর রহমানকে উদ্ধৃত করে এরআগে প্রকাশিত এক সংবাদ থেকে জানাযায়, শেভরণের পাওনা  বিল কমবেশি ১৫০ মিলিয়ন ডলারের মতো বলে তিনি জানিয়েছিলেন। তিনি একই সাথে বলেছিলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ গ্যাস ও কনডেনসেট তারা সরবরাহ করছে তাতে কোম্পানিটির মাসিক বিলের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪০ মিলিয়ন ডলারের মতো। 
বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশের বকেয়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই কথা হচ্ছে। মাঝে মাঝে কিছু অর্থ ছাড়ও দিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও কোম্পানিটির সরবরাহ করা কয়েক মাসের গ্যাসের বিল বকেয়া পড়েছে। গত ডিসেম্বরে শেভরন ইন্টারন্যাশনাল এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ক্যাসুলো বাংলাদেশ সফর করেন। ওই সফরে ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই বৈঠকেও বকেয়ার বিষয়টি আলোচিত হয়ে বলে সূত্র জানায়। 
প্রসঙ্গত, শেভরন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সমন্বিত জ্বালানি কোম্পানি। জ্বালানি খাতের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের পদচারণা রয়েছে। কোম্পানিটি বাংলাদেশের ব্লক-১২, ১৩ ও ১৪ এলাকায় গ্যাস উত্তোলন করে আসছে। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের বৃহত্তম উৎপাদক, যা মোট দেশীয় প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশ এবং দেশীয় কনডেনসেট উৎপাদনের ৮৩ শতাংশের মতো। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র। ১৩ জানুয়ারি গ্যাস ফিল্ডটি ৯৭৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন গ্যাস সরবরাহ দিয়েছে। এক সময় গ্যাস ফিল্ডটি থেকে ১৩০০ মিলিয়নের উপর উৎপাদন হলেও মজুদ কমে যাওয়ায় কমে আসছে উৎপাদন। এক সময়ে দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে দৈনিক ২৮০০ মিলিয়নের মতো গ্যাস উৎপাদিত হলেও ১৩ জানুয়ারি মাত্র ১৯৩৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেছে। মজুদ কমে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত কমে আসছে উৎপাদন। 
অন্যদিকে দেশে গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা সামাল দিতে ২০১৮ সালে এলএনজি আমদানি শুরু হয়। এরপর ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে আকাশচুম্বি হয়ে পড়ে এলএনজির দাম। উচ্চমূল্যের পাশাপাশি দেশের মুদ্রামান হ্রাস পাওয়ায় ডলার দাম বেড়ে গেলে বাজারের সরবরাহ পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ব্যার্থ হচ্ছে পেট্রোবাংলা। দফায় দফায় দাম বাড়িয়েও কিনারা করতে পারছে না তারা। নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভে যথাক্রমে ৩০ ও ৩১.৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে শেষ পর্যন্ত এবার পাইকারি পর্যায়ে ৭৫.৭২ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা।  
পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছে, দেশীয় উৎস থেকে পাওয়া গ্যাসের গড় দর পড়ছে ৬.০৭ টাকার মতো। এরসঙ্গে ৮০০ মিলিয়নের মতো আমদানি করার পর ২০২২-২৩ অর্থবছরে গড় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯.০৯ টাকা, তখন গড় বিক্রয়মূল্য ছিল ১১.৯১ টাকা, আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট আমদানির পর গড় মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৩.৮৫ টাকা। ওই বছরে গড় বিক্রয় মূল্য ছিল ২২.৮৭ টাকা, প্রতি ঘনমিটারে লোকসান হয়েছে ৯৮ পয়সা করে। গত ৬ অর্থবছরে ঘাটতি হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। 
জানাগেছে, পেট্রোবাংলার কাছে যেমন অর্থ পাওনা রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। তেমনি পাওয়ার সেক্টরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে পেট্রোবাংলার বকেয়ার পরিমাণ বর্তমানে ২৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এককভাবে মেঘনা গ্রুপের কাছেই প্রায় ৮০০ কোটি টাকা গ্যাস বিল বকেয়া পড়েছে তাদের। 





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]