ই-পেপার বাংলা কনভার্টার শনিবার ● ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ৫ মাঘ ১৪৩১
ই-পেপার শনিবার ● ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩২ পিএম  (ভিজিটর : ৫৪)

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলার জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় ১৫ মাস ধরে অভিযান-সংঘাত চলার পর অবশেষে সেখানে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস এবং ইসরায়েল।

এই যুদ্ধের শুরু থেকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকা যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতার বুধবার নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে যুদ্ধবিরতি। অনেক আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক এ ঘটনাকে ‘নাটকীয় সাফল্য’ বলে অভিহিত করেছেন।

কী কী ধারা রয়েছে এ চুক্তিতে

গত বেশ কয়েক মাস ধরে হামাস, ইসরায়েল এবং মধ্যস্থতাকারী তিন দেশ মিসর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের যুদ্ধবিরতির চুক্তির খসড়া আদান-প্রদান হয়েছে। বিভিন্ন সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধনের পর চূড়ান্ত যে চুক্তির ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে হামাস এবং ইসরায়েল, সেটি এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গতকাল এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত এই চুক্তিতে বেশ কিছু অমিমাংসিত ধারা রয়েছে। শিগগিরই সেগুলোর মিমাংসা হবে বলে আশা করছেন তিনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে অতর্কিতে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি ও রকেট চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা, সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৫১ জনকে। হামাসের অতর্কিত এ হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধার করতে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

২০২৩ সালের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে এক অস্থায়ী বিরতির সময় ১০৭ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। গোষ্ঠীটির নেতারা জানিয়েছেন, এখনও ৯৪ জন জিম্মি রয়েছেন তাদের কব্জায়। তবে ইসরায়েলের ধারণা, বর্তমানে জীবিত জিম্মিদের সংখ্যা মাত্র ৬০ জন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, হামাস এই জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি প্রায় ১ হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে দেশটির সরকার।

কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে এ চুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউজে এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, তিন স্তরে বাস্তবায়ন করা হবে এই চুক্তি।

প্রথম স্তর বা পর্যায়ের মেয়াদ হবে ৬ সপ্তাহ। এই মেয়াদে গাজায় হামলা-সংঘাত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে এবং নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মুক্তি দেবে হামাস। এই জিম্মিদের মধ্যে নারী, বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।

প্রথম পর্যায়;
 কতজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে— সে সম্পর্কে বাইডেন সুনির্দিষ্টভাবে কিছু না বললেও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস।

এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে হামাসের এক নেতা বিবিসিকে জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি শুরুর দিন ৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। পরবর্তী ৬ সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে আরও ৩৩ জনকে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজায় অভিযান শুরুর সময় সেখানকার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২৩ লাখ। আইডিএফের ভয়াবহ অভিযানে গাজার বাসিন্দাদের প্রায় সবাই তাদের বাড়িঘর হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে বাধ্য হয়েছেন।

বাইডেন বলেছেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে গাজার জনবসতিপূর্ণ সব এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে ইসরায়েল এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যেতে পারবেন।

এছাড়া প্রথম স্তরের ৬ সপ্তাহে অন্তত ৬০০ ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করবে বলেও গতকালের ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট।

যুদ্ধ বিরতির দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায় কবে থেকে শুরু হবে— সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে বিরতির প্রথম স্তর শেষ হওয়ার আগেই। এ চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি নেতা বিবিসিকে জানিয়েছেন, বিরতির ১৬তম দিন থেকে এ বিষয়ক আলোচনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গতকালের ব্রিফিংয়ে বাইডেন জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায় কবে থেকে শুরু হবে— এ সংক্রান্ত মিমাংসা হওয়ার আগ পর্যন্ত বিরতের প্রথম পর্যায় চলবে।

দ্বিতীয় পর্যায়;
বুধবারের ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, বিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে স্থায়ীভাবে যুদ্ধ শেষ হবে গাজায়। প্রথম পর্যায়ের জিম্মিদের মুক্তির পর অবশিষ্টদের মুক্তি দেওয়া হবে দ্বিতীয় পর্যায়ে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১ হাজার জনকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। এই ১ হাজার কয়েদির মধ্যে এমন বন্দি রয়েছেন অন্তত ১৯০ জন, যারা ১৫ বছর বা তার তারও বেশি সময় কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত আসামি।

ইসরায়েলের এক সরকারি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, যেসব ফিলিস্তিনি কারাবন্দির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হবে না।

এই স্তরে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হবে বলে জানা গেছে।

তৃতীয় পর্যায়;
সব ইসরায়েলি জিম্মি এবং এক হাজার ফিলিস্তিনি কারাবন্দির মুক্তির পর শুরু হবে চুক্তির তৃতীয় পর্ব। এ পর্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকাকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো ফের নির্মাণ করা হবে। এই স্তর আগামী কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হবে।

সূত্র : বিবিসি





আরও খবর


সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]