প্রকাশ: শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ১:০২ পিএম (ভিজিটর : ১৫৬)
কি পয়েন্ট ইনসটলেশন বা কেপিআই সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের খুব বেশি আগ্রহ ছিল না কখনোই, কিন্তু জুলাই বিপ্লবের সময় টিভি সেন্টার, মেট্রো স্টেশন এবং সড়ক বভনে জনতার হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলে তৎকালীন সরকার আন্দোলনকারীদের নাশকতাকারী বলে প্রচার করলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মিডিয়াতে বলেছিলেন এগুলো তো কেপিআই, সরকার নিরাপত্তা না দিয়ে নাশকতার কথা বলছে। পরবর্তীতে জানা যায় (ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনায়) তখনকার সরকারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে নাশকতা করেছিল এবং তার জন্য ওই সব জায়গা থেকে নিরাপত্তা বাহিনী সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। যাতে প্রতীয়মান হয় আন্দোলনকারীরা নাশকতাকারী। এগুলো এখন ইতিহাসের বিষয়। গুরুত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ সচিবালয় কেপিআই তালিকায় উপরের দিকে থাকার কথা। আমাদের সচিবালয় মোটেই নিরাপত্তায় নেই। শুধু পুলিশ দিয়ে ভবন প্রহরা নিশ্চিত করলেই নিরাপত্তা রক্ষা হল না। বৈদ্যুতিক লঅইন যদি ত্রুটিযুক্ত থাকে, যদি ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম ঠিক না থাকে তাহলেও ভবনটি নিরাপদ থাকল না।
২৬ ডিসেম্বর রাত ১টা ৫২ মিনিটের সময় বচিবালয়ে ৭নং ভবনে আকস্মিকভাবে আগুন ধরে যায়। যে কোনো দেশের প্রশাসনের কেন্দ্রস্থলে যদি আগুন ধরে নথিপত্র পুড়ে যায়। তা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের মিডিয়ার কারণ হিসেবে প্রথমেই নাশকতার কথা সামনে আসে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের প্রধান দুই নেতা নাহদি ইসলাম ও আসিফ মাহমুদের মন্ত্রণালয়েই আগুন ধরে। তাছাড়া একটি কুকুরের মৃতদেহ নিয়ে বিরাট রহস্য সৃষ্টি হয়, প্রশ্ন দেখা দেয় কুকুর অত ওপরে উঠল কি করে! কিন্তু এ ব্যাপারে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কমিশনের প্রধান জ্যেষ্ঠ স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এই আগুনের সূত্রপাত।
তদন্ত কমিটির বক্তব্যের সাথে কেউ দ্বিমত পোষণ করছেন না। এর একটা অন্যতমত কারণ সচিবালয়ের ভবনগুলো অনেক পুরনো। প্রতিবছরই এসব ভবনে উন্নয়ন কাজ হয়। কর্মকর্তাদের রুম বেনোভিশন করা হয়। তাতে রুমগুলোর জেল্লাবাড়ে। কিন্তু এসব ভবনের বৈদ্যুতিক লাইন রক্ষাবেক্ষণের কাজ সেভাবে করা হয় না। সচিবালয়ে সিসি ক্যামেরা সচল ছিল, যা নাইটভিশন। সেই ভিত্তিতেও কোনো নাশকতকারী দেখা যায়নি, কুকুরটাও একা যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। শর্টসার্কিট হলে তারে লিকেজ থাকলে সেখানে আগুন ধরে যায়। সুতরাং এদিকে নজর দিতে হবে। শুধু সচিবালয় নয়, যত কেপিআই আছে, সবগুলোর পুলিশি নিরাপত্তাসহ অবকাঠামোগত সব ধরনের সার্ভিস লাইনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।