হাজি শরীয়ত উল্লাহ’র নামে ধন্য শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার পালং,তুলাসার,রুদ্রকর ও আঙ্গারিয়া ইউনিয়রের অংশ নিয়ে ২৪.৭৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভাটি ১৯৮৫ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি স্থাপিত হয়।৬০ হাজারের বেশী মানুষের বসবাস এ পৌরসভায়। ৪০ বছর বয়সের পৌরসভাটি মানের দিক দিয়ে প্রথম শ্রেণীর হলেও সেবার মান তৃতীয় শ্রেণীরও নয় বলে দাবী পৌরবাসীর।
প্রায় ৪ যুগের পৌরসভার তেমনটা উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। যেমনি রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। তেমনি ড্রেনেজ,সড়ক বাতি সহ তেমন কোন উন্নয়নে লক্ষ্য করা যায়নি এ পৌরসভায়। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বেহাল দশা বেশিরভাগ সড়কের।বাহির থেকে পৌরসভায় প্রবেশ করার একটি সড়কও নিরাপদ নেই। সড়কে অবস্থা এতটাই নাজুক যার উপর দিয়ে হেটে যাওয়াই কষ্টসাধ্য।
৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইলিয়াস বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয়। সড়কে পানিজমে পিচ উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত।এতে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কের এমন অবস্থা হলেও সংস্কারে উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।ফলে পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক এখন চলা চলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। যানবাহন তো দূরে থাক,পায়ে হেঁটে যাওয়াই দুষ্কর।
পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাঘিয়ার এলাকার বাড়ির মালিক মানিক মিস্ত্রি বলেন, সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। খানাখন্দে ভরপুর গোটা সড়কগুলো। চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। এতে প্রতিদিন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌর বাসীসহ এই শহরে আসা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ।
পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের স্বর্নঘোষ এলাকার মোঃ রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, সদর উপজেলার আঙ্গারিয়া,তুলাসার ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩ টি ওয়ার্ডের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন চৌরঙ্গী -স্বর্নঘোষ সড়ক দিয়ে। কয়েক বছর ধরে সড়কটি এমন বেহাল। পিচ উঠে কয়েক কিলোমিটার সড়কে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
শুধু এ সড়কটিই নয়। এমন ভগ্নদর্শ আটং শরীয়তপুর সড়ক,কানার বাজার-পালং উত্তর বাজার সড়ক,রাজগঞ্জ পালং সড়ক, মনোহর বাজার -আমতলী সড়কসহ প্রায় প্রতিটি সড়কেরই একই অবস্থা।
সড়কের কোন সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে জনদূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকায় বসবাসকারীদের। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে জমে পানি। যার ফলে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা করে ট্যাক্স বাড়িয়ে নিলেও সে অনুযায়ী তেমন কোন উন্নয়ন দেখা যায়নি বিগত ১৬ বছরে। বিগত ৩টি পরিষদে জনগন ভোট দিতে না পারায় পতিত আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা ক্ষমতায় বসে নিজেদের আখের গুছিয়েছে। জনগনের আকাংখার প্রতিফলন ঘটেনি।
শরীয়তপুর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, বর্তমানে সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য নতুন কোন বরাদ্দ্য নাই। তবে পূর্বের প্রকল্পের অন্তভুক্ত সড়ক গুলো উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলমান আছে। তবে উন্নয়নের আওতায় কোন কোন সড়ক আছে তা তিনি সঠিক ভাবে নিদ্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না। কারণ এটা প্রকৌশল বিভাগে তাই সেখানে যোগাযোগ করলে ভালো হয়।
সড়কের বেহাল দশার বিষয় পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী বলেন, শরীয়তপুর পৌরসভায় সড়ক উন্নয়নে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ্য না থাকায় দীর্ঘদিন সড়ক গুলোর উন্য় বন্ধ আছে। তবে স্থানীয় সরকার বিভাগে পিটিআই-আটং সড়ক, পাহাড় বাড়ি থেকে আটং বৃক্ষতলা সড়ক, , ডিসি অফিস থেকে আটং বাজার পর্যন্ত সড়কের ডিপিপি করে প্রকল্প ভুক্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এ ছারাও চৌরঙ্গী থেকে মার্কাস মসজিদ সড়ক,আজিজুল সিকদারের বাড়ি থেকে সাবনুর মার্কেট সড়ক, দাসার্তা চৌরাস্তা থেকে হারুন কাউন্সিলরের বাড়ি পর্যন্ত ও স্টেডিয়াম থেকে সাবেক মেয়র একেএম নাসির উদ্দিন কালুর বাড়ি পর্যন্ত সড়কে উন্নয়নের জন্য ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌরসভার জন্য বার্ষিক বরাদ্দ্য চাহিদার তুলনায় খুবই কম। বরাদ্দ্য বৃদ্ধি করা হলে সড়ক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন সহজ হবে।