চট্টগ্রামের রাউজানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মো. আবদুল্লাহ মানিক আবদুল্লাহ (৩৭) নামে এক যুবদলকর্মী খুন হয়েছেন। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গরিবুল্লাহ পাড়া এলাকার ভান্ডারী কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে।
রাতেই পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করেন ওই কলোনি হতে। নিহত মো. মানিক ওই এলাকার মৃত আব্দুল মোতালেবের ছেলে। নিহতের মা পাখিজা বেগম বলেন, ৫ ই আগস্টের পর দেশে আসেন মানিক। গ্রামের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে সেই এলাকায় সবসময় থাকতেনা। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে চট্টগ্রাম শহরের ভাড়া বাসায় থাকতেন।
তবে গত কয়েক মাস আগেই মানিক নিয়মিত এলাকায় থাকতেন। গতকাল রাতে আমার ছেলে বাড়ির কাছাকাছি একটি ভাড়া ঘরে ভাত খেতে গেলে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। আমার ছেলে একজন ভালো মানুষ ছিলো। কেন হত্যা করা হল আমার সন্তানকে এটার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
বোন নাছিমা আকতার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রাজানীতির কারণে ১৫ বছর আগেও আমার একটা ভাইকে আমরা হারিয়েছি, আজও এক ভাই হারিয়েছি। আমার ভাইকে সন্ত্রাসীরা ভাত খাওয়া সময় মুখে অস্ত্র ঢুকিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমার ভাইয়ের অবুঝ দুই সন্তান তারা এখন বাবা কাকে ডাকবে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
জানা গেছে, নিহত যুবদলকর্মী মানিক বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী। এবং উপজেলা যুবদলের কর্মী ছিলেন। সেই ইট-বালির ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে, শনিবার রাত সাড়ে ১২টায় ভান্ডারী কলোনির হানিফের ভাড়া ঘরে খাবার খেতে গিয়েছিল মানিক। এসময় অজ্ঞাতনামা ১০-১২ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী শর্টগান এর গুলি করে এবং চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়। হত্যাকারীরা মুখোশধারী ছিল।
খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রাউজান থানার ওসি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির আরেক গ্রুপের নেতাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে এ হত্যাকাণ্ড বিরোধের জের ঘটতে পারে। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে ৫'ই আগস্টের পর হতে রাউজানের রাজনীতির মাঠে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায় ৭জন নেতাকর্মী খুনের ঘটনা ঘটছে।
এসব ঘটনা নিয়ে এলাকাজুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। উত্তর জেলা বিএনপির নেতা হাজী জসীম উদ্দিন বলেন, মানিক আমাদের যুবদলের কর্মী ছিল। আমরা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর কর্মী হিসেবে কাজ করি। ফজল হক গ্রুপ, মামুন গ্রুপ, ফরিদ গ্রুপের সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেছে। আগেও তাকে কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করেছিল।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এবং থানায় মামলাও হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে ২ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়।