টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে চলমান দাখিল পরীক্ষায় গনিত বিষয়ে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় কেন্দ্র সচিব ও এক পরীক্ষার্থীসহ ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টায় ভূঞাপুর ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন, ভূঞাপুর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মাওলানা আব্দুস ছোবাহান ও পরীক্ষার্থী সোনিয়া আফরোজ লিমা। সে উপজেলার খাস বিয়ারা দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।
অপর চারজন হলেন- প্রশ্ন ফাঁসের সহযোগি টেপিবাড়ী গ্রামের ইকবাল তালুকদারের ছেলে সুমন (২৫), ছাব্বিশা গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে মিজানুর (৩৫), আমুলা গ্রামের ইদ্রিস হোসেনের ছেলে শাহ আলম (২৭), পূর্ব ভূঞাপুরের হায়দার আলীর ছেলে রায়হান আলী (৩৫)।
এদিকে এ ঘটনায় ওই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মনিরুজ্জামান বাদি হয়ে ৬জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় ভূঞাপুর ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে এসএসসি (দাখিলের) গণিত পরীক্ষা চলছিলো। এতে ১৮২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ওই কেন্দ্রের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষের পরীক্ষার্থী সোনিয়া আফরোজ লিমা প্রশ্নপত্র তার ভাইয়ের কাছে নিচে ফেলে দেয়। পরে প্রশ্নটি ফটোকপির দোকানে নিয়ে যায় সে। সকাল সোয়া ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. পপি খাতুন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
এরপর সেখানে উপস্থিত হন সহকারি কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলাম। এসময় তিনি মাহিম কম্পিউটার, কমার্স প্রাইভেট সেন্টার, ছায়াছবি স্টুডিও ও বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে তিনি প্রশ্নপত্রের ফটোকপি দেখতে পান। পরে সেখান থেকে সুমন, মিজানুর, শাহ আলম রায়হানকে আটক করা হয়।
এছাড়াও দায়িত্বে অবহেলায় কেন্দ্র সচিব মাওলানা আব্দুস সোবহান ও প্রশ্ন বাহিরে ফেলে দেয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থী লিমাকেও আটক করা হয়।
এদিকে ১৮২ জন পরীক্ষার্থীর জন্য থানা থেকে ২০০ টি প্রশ্ন বুঝিয়ে দেয়া হয় কেন্দ্র সচিব আব্দুস সোবহানকে। ১৮ টি প্রশ্ন বেশি থাকার কথা থাকলেও ১৬ টি প্রশ্ন বেশি পাওয়া যায়। দুটি প্রশ্ন পাওয়া যায়নি। বাকি দুটি প্রশ্ন কোথায় আছে তারও তথ্য দিতে পারেনি কেন্দ্র সচিব।
এবিষয়ে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, কেন্দ্র সচিব ও এক পরীক্ষার্থীসহ মোট ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. পপি খাতুন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, প্রশ্নপত্র কম থাকা ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে কেন্দ্র সচিবকে আটক করা হয়। এছাড়া কক্ষ থেকে পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্র বাহিরে পাচারের অভিযোগে এক পরীক্ষার্থী ও তার ৪ সহযোগিকে আটক করা হয়েছে। ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মনিরুজ্জামান বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।