বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চায় বলে বলে জানিয়েছেন, দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, সরকার ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে কথা বলছে আমরা এত দেরিতে নির্বাচন চাই না। আগামী রমজানের আগে (ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রমজান শুরু) আমরা নির্বাচন চাই। এ বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধিদলকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বুধবার গুলশানে মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি। আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের বিচার দেখতে চায় জামায়াতে ইসলামী। বৈঠকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে মার্কিন শুল্ক আরোপ রহিতের বিষয়ে বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তাদের সাথে আমাদের খোলামেলা কথা হয়েছে। তারা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা জানতে চেয়েছেন। তারা আগামী ইলেকশন কখন হবে, কীভাবে হবে এটা জানতে চেয়েছেন। তারা আরও জানতে চেয়েছেন সবগুলো দল রিফর্ম চাচ্ছে, সেই রিফর্ম কেমন হতে পারে এবং আমরা কি চাচ্ছি। আমরা যদি আগামীতে দেশের দায়িত্ব পাই তাহলে আমাদের ইকোনমিক পলিসি এবং ফরেন রিলেশনটা কেমন হবে? তারা আমাদের রিজিওনাল বা আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়গুলো জানতে চেয়েছেন। আমরা এ সমস্ত বিষয় নিয়ে তাদের সাথে খোলামেলা কথা বলেছি।
তারা মাইনরিটি ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন, তারা উমেনসদের রাইটস নিয়ে কথা বলেছেন; তারা লেবার রাইটস নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা তাদের এসব বিষয় নিয়ে কনভারসেশন করেছি। এর পাশাপাশি আমরা তাদেরকে অনুরোধ করেছি আমাদের দেশ এখন ক্রিটিক্যাল জাংচার-এ আছে; একটা ক্রুশিয়াল টাইম পাস করছে। এসময় আমেরিকার পক্ষ থেকে ৩৭% ট্যারিফ ধার্য করা হয়েছে। এটা যেন তারা পুনর্বিবেচনা করেন এবং আমাদের এ অনুরোধ যেন তাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের নিকট পৌঁছে দেন।
আমরা আমাদের দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা করি এবং আমাদের দেশেও গণতন্ত্র চর্চা করতে চাই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এজন্য আমাদের যা করণীয় তা আমরা করবো। উদাহরণ স্বরূপ আমরা বলেছি, প্রত্যেকটা ক্রেডিবল ইলেকশনে আমরা অংশগ্রহণ করেছি। কম হোক, বেশি হোক সংসদের ভিতরে আমাদের সংসদ সদস্য ছিলেন।
এ্যাট দ্যা সেইম টাইম ইলেকশন যখন বাংলাদেশে মৃতপায় হয়ে গিয়েছিলো এরশাদ সাহেবের সময়, তখনকার জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব ইলেকশনকে জীবন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কেয়ারটেকার সরকার ফর্মুলা প্রস্তাবনার মাধ্যমে; যেটা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলো। কিন্তু দুঃখজনভাবে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে দলীয় স্বার্থে এটাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। এখন আবার সারা জাতি এটা চাচ্ছে এবং আমরা আশাকরি এটা আবার সংবিধানে সন্নিবেশিত হবে।
আমরা আগামী নির্বাচনটা ফেয়ার ভিত্তিতে করতে চাই। ইতোমধ্যে আমরা তা বারবার বলেছি আপনারা জানেন। কেন চাই তাও আপনারা জেনেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব মোবারক হোসাইন এবং আমীরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।