ই-পেপার বাংলা কনভার্টার সোমবার ● ২১ এপ্রিল ২০২৫ ৮ বৈশাখ ১৪৩২
ই-পেপার সোমবার ● ২১ এপ্রিল ২০২৫
Select Year: 
ব্রেকিং নিউজ:




করোনায় বাঁধা সেশন জট কাটিয়ে উঠছে হাবিপ্রবি
হাবিপ্রবি সংবাদদাতা
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫, ২:২০ পিএম  (ভিজিটর : ২৩৮)
২০২০ সালের ১৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) একাডেমিক কার্যক্রম ও হলসমূহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

ওই সময়ে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরী সেবা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। তবে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সেশনজটের কবলে পড়েন ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা। অনেকটা আটকে থাকে ২০১৬, ২০১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অনার্স কার্যক্রম। এতে ২০১৬-২০১৯ কিংবা পূর্ববর্তী ব্যাচের অনার্স সম্পন্ন হতে সময় লেগে যায় প্রায় সাড়ে ৬ থেকে ৭ বছর। 

দীর্ঘ সময় পর ইউজিসি'র নির্দেশনা মোতাবেক অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী অনলাইন ক্লাস শুরু করতে আদেশ জারি করে হাবিপ্রবি প্রশাসন। আদেশে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম চালিয়ে যেতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্ব-স্ব অনুষদের ডিনদের বলা হয়। ২০২০ সালের জুলাই হতে শুরু হয় সকল অনুষদের অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম। এতে সক্রিয় হতে শুরু করে ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থা, প্রাণ সঞ্চার হয় শিক্ষার্থীদের মাঝে।

করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পরে অনলাইনেই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২০২১ সালের ৪ আগস্ট থেকে পরীক্ষা শুরুর লক্ষ্যে রুটিনও প্রকাশ করে অধিকাংশ অনুষদ ও বিভাগ। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নেওয়ার লক্ষ্যে ১৪ জুলাই থেকে হাবিপ্রবির তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ও ডেক্সটপ/ল্যাপটপ ব্যবহার করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুবিধার্থে টিউটোরিয়াল ভিডিও প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবুও সেসময় সেশন জটের কবল থেকে উদ্ধার হতে পারেনি কোনো অনুষদ। ২০২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের ২০২৩ সালে চার বছর মেয়াদি অনার্স শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত কোনো বিভাগ তাদের অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করাতে পারেনি। ফলে হতাশা, আত্মহত্যার প্রবণতা, ঝরে পড়ার হার বৃদ্ধি পেতে থাকে। 

তবে করোনা পরবর্তী সময়ে অনুষদ ও বিভাগীয় তৎপরতা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় করোনাকালীন সেশন জট কাটিয়ে উঠতে শুরু করেন তারা। সম্পূর্ণ জট কাটিয়ে উঠতে না পারলেও এদিক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। একাডেমিক ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার দৌঁড়েও রয়েছে বাকি অনুষদের বিভাগগুলো।

কিভাবে সম্ভব হচ্ছে এটা, তা জানিয়েছেন এসব বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা। তারা বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে ৪ মাস মেয়াদি সেমিস্টার অনুসারে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়াতে এটা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ৬ মাস মেয়াদি সেমিস্টার কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যা বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এতে আগের সেশন জটের সাথে করোনাকালীন ঘাটতিও মিনিমাইজ করা সম্ভব হচ্ছে। 

তারা আরো বলেন, একটি ডিপার্টমেন্ট বা ফ্যাকাল্টি যদি একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রস্তুত করে তার বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা এবং কৌশল অবলম্বন করেন তবে তা শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের জন্যই ভালো হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি থাকতে হবে। এছাড়াও পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার অনধিক ১৫ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করাও জরুরি। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, ক্যাম্পাস জীবনে শুরুতেই মাত্র এক মাস ক্লাস করার পরই করোনার ব্যারাকলে আটকা পরি। প্রায় দেড় বছর করোনার মধ্যেই কাটাই। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে অনলাইন ক্লাস পরীক্ষা চালু করা হলেও দেড় বছরে মাত্র একটি সেমিস্টার পরীক্ষা দিয়েছি। এতে প্রায় এক বছরের সেশন জটে পড়ি আমরা। কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিটা সেমিস্টার ছয় মাস থেকে চার মাসে নিয়ে আসায় আমরা অনেকটা জট কাটিয়ে উঠি।

বিভাগীয় শিক্ষক সংকট সহ নানান জটিলতায় পূর্বে সেশন জটের কবলে পরেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেশন জট নিরসনে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও তৎকালীন কোনো প্রশাসন এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখতে পারেনি। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত দাবির একটি - সেশন জট নিরসন। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, নতুন এ প্রশাসন সেশন জট মুক্ত হাবিপ্রবি উপহার দিবেন সকলকে।







সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বার্তা বিভাগ : ৯৫৬৩৭৮৮, পিএবিএক্স-৯৫৫৩৬৮০, ৭১১৫৬৫৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন ঃ ৯৫৬৩১৫৭, ০১৭১২-৮৮৪৭৬৫
ই-মেইল : [email protected], [email protected]