প্রকাশ: শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:০৮ পিএম (ভিজিটর : ৫১)
কক্সবাজার জেলায় উৎপাদিত লবণ দেশের একটি বড় অংশের চাহিদা পুরণ করেন। তবে মৌসুমের শুরুতেই মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম অস্বাভাবিক ভাবে কমে যাওয়ায় হতাশ হয়েছেন চাষীরা।উৎপাদন খরচের চেয়ে বিত্রুি মূল্য কম থাকায় তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
কক্সবাজার জেলার বৃহত্তম অংশের লবণ উৎপাদন হয় দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত না করায় মিল মালিক ও দালাল সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রান্তিক লবণ চাষীরা। তথ্য অনুযায়ী গেল মৌসুমের তুলনায় এ বছর মণ প্রতি লবণের দাম কমেছে অন্তত ১০০ টাকা। গত মৌসুমে লবণের মণ প্রতি মূল্য ছিল-৪০০-৪৫০ টাকা।
এবার সেই লবণ বিত্রিু হচ্ছে ৩৩৫ টাকায়। তবে চাষীরা পাচ্ছেন মাত্র-২৫০-২৭০ টাকা। বাকি অংশ দালাল সিন্ডিকেট লুটে নিচ্ছে। এছাড়া পলিথিনের উচ্চ মূল্য, জমি বর্গার কঠিন শর্ত এবং বাজারের অব্যবস্থাপনার কারণে চাষীরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
বড় মহেশখালী ইউনিয়নের লবণ চাষী ডাঃ ফরিদুল আলম জানান, মৌসুমের শুরুতে যদি লবণের দাম এভাবে কমে যায় তাহলে লবণ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হবে। আমাদের লবণের দাম বাড়ে না, কিন্তু দালালদের কমিশন সবসময় থাকে। গত বছর রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন করেছি, কিন্তু লবণের মূল্য কমে যাওয়ায়। লেকসান দিয়ে লবণ বিত্রুি করতে পারছিনা। সরকার সবকিছু সংস্কার করলে ও আমাদের বিষয়টা সংস্কার হচ্ছে না। এটি অত্যন্ত দুঃখ জনক।
শাপলাপুর ইউনিয়নের লবণ চাষী দেলোয়ার হোসেন দুলাল বলেন, আমরা গরীব মানুষ। পরের জমি বর্গা নিয়ে লবণ চাষ করি। বাধ্য হয়ে দালালের কাছ থেকে দাদন হিসাবে পলিথিন ও জমি বর্গা নিতে হয়। কিন্তু আমাদের এই রক্তঝরা পরিশ্রমে উৎপাদিত লবণের লভ্যাংশ লুটেপুটে খাচ্ছে দালালেরা। এছাড়াও মাপের ক্ষেত্রে ও মণ প্রতি ১৫-২০ কেজি লবণ বেশি নিচ্ছে, কিন্তু করার কিছু নেই।
মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী দক্ষিণ রাজঘাট এলাকার লবণ চাষী নজরুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে লবণের দাম কমে যাওয়ারয় খুবই দুশ্চিন্তায় আছি। এক মণ লবণ বিত্রুি করে ২ কেজি চালও পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে দিন দিন লবণের দাম কমে গেলে আমাদের কি উপায় হবে। আগামীতে হুমকির মুখে পড়বে লবণ শিল্প। তিনি সরকারের কাছে ন্যায্য মূল্য দাবী জানান।
কক্সবাজার জেলা লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের উপপরিচালক জাফর ইকবাল ভূইয়া বলেন, বর্তমানে লবণের ন্যায্য মূল্য না থাকলেই চাহিদা অনুযায়ী দাম বৃদ্ধি পাবে। চাষীদের হতাশ না হয়ে উৎপাদন মুখী হওয়ার আহবান করেন। তিনি আরো বলেন লবণ ব্যবসায়ীদের বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে চাষীদের সোচ্চার হওয়া জরুরী। তাদের সোচ্চারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে সঠিক মাপ কার্যকর হবে। পাশাপাশি মাপ সঠিক রাখতে সরকারি বিধি মোতাবেক মাঠ পর্যায়ে অভিযান চলমান রাখবো।