পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শিগগিরই একটা রোডম্যাপ আসবে। যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তখন রাজনৈতিক অস্থিরতা কেটে যাবে। বিনিয়োগকারীরা আবার বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসবে।’ ১১ জানুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর এনআরবি আয়োজিত ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ : এনআরবি এন্ড ইউএন পিসকিপার্স লিডিং দ্য ওয়ে’ শীর্ষক ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজির উদ্বোধন ও ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রধান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তৌহিদ হোসেন। এনআরবির চেয়ারপার্সন এমএস সেকিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের মনোভব কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে। এতদিন উপদেষ্টারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গেলেই সংস্কারের প্রসঙ্গটি টানতেন। কিন্তু দেশে বিদ্যমান কিছুটা বিরূপ পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর দ্রুত নির্বাচনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার হয়তো নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ভাবছে, যার আভাস পাওয়া গেল। সরাকরের এই মনোভব ইতিবাচক। কারণ দেশে অনির্বাচিত সরকার বেশিদিন থাকা উচিত নয়। সে বিবেচনায় দ্রুতই নির্বাচনের প্রস্তুতি দরকার। তবে অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের অঙ্গীকার করে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। সংস্কার তাদের করতেই হবে। সেজন্য নির্বাচন প্রস্তুতির পাশাপাশি সংস্কার কার্যক্রমেও গতি আনতে হবে। ঘুনে ধরা পচা রাষ্ট্রকাঠামো রেখে দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা প্রদান করা ঠিক হবে না।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে কয়েকটি বড় দল আছে। তারা বিশ্ব পরিসরে বড় দল। কারণ পৃথিবীর কোনো দেশের থেকে বাংলাদেশে বড় দলগুলো কর্মি শাখা অনেক বেশি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াতের ক্ষেত্রে এমনকি জাতীয় পার্টিরও সারা বিশ্বে শাখা আছে। বাংলাদেশের যে দুই তিন দল শত্রুভাবাপন্ন, একই রকম শত্রু ভাবাপন্ন আমাদের প্রবাসীরা, যারা এসব দলের শাখাগুরোতে আছেন, এ রকমকি পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের ক্ষেত্রে দেখেছেন? এটা আমাদের ইমেজের ক্ষেত্রে বিরাট ক্ষতি করছে। ক্ষতি হচ্ছে আমাদের ব্রান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেলে সেখানে দুয়োধ্বনি দিতে কেউ দাঁড়িয়ে থাকে না। এই ধারা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’
পৃথিবীর এক একটা দেশ এক একভাবে উন্নয়ন করেছে। দেশের মাটি হাওয়া মানুষ এসব মিলিয়ে একটা দেশ গড়ে ওঠে। আমাদের দেশের মানুষ বিভক্তিপ্রবণ উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে বেরিয়ে এসেছে। আগস্ট-বিপ্লবের সময় অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশ হবে একটি পরিবার।’ সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার পথ প্রশস্ত হতো। এজন্য আমরা সংস্কার কার্যক্রমে গতি আনার কথা বলছি, যাতে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায়। তবে সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে দেশের কিছুই বদলাবে না।