প্রকাশ: রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:৫৭ এএম (ভিজিটর : ৬৭)
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এখনো কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি, বরং বলা চলে, দিন দিন অবনতিই হচ্ছে। ইদানীং পত্রিকার পাতায় চুরি-ছিনতাই-ধর্ষণের একাধিক খবর প্রকাশিত হচ্ছে। বস্তুত, সন্ধ্যা বা রাত নয়, দিনদুপুরেও ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে এখন বেপরোয়া ছিনতাইকারীদের অবাধ বিচরণ। এরা ছিনতাই করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না; শারীরিকভাবে ক্ষতিও করছে। ইতোমধ্যে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অনেকে। শুধু পথেই নয়, বাড়িতেও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। সোমবার রাতে ঢাকার ধামরাই পৌর শহরের একটি বাসায় ডাকাতির সময় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক তরুণী। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হলেও প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত পুলিশ অপরাধীদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে জানা গেছে।
রাজধানীতে শতাধিক ছিনতাই হটস্পট তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে বেশকিছু এলাকায় ছিনতাইকারীরা প্রকাশ্যে বিচরণ করে। এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই রাজধানীজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রতিকার তথা আসামিদের গ্রেপ্তারের উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করা হলেও অনেক সময় আইনের ফাঁক গলে তারা বেরিয়ে যায়। এটি যে সন্তোষজনক উত্তর নয়, তা বলাই বাহুল্য। কারণ জনগণের করের টাকায় বেতনভুক পুলিশ বাহিনী সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সমাজে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখবে, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যদি তারা নির্বিকার ভূমিকা পালন করে, তা শুধু অনভিপ্রেতই নয়, উদ্বেগজনকও বটে।
এ প্রেক্ষাপটে অপরাধ দমনে সংশ্লিষ্টদের আরও মনোযোগ দেওয়া দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে দায়বদ্ধতা রয়েছে, তা তাদের যথাযথভাবে পরিপালন করা উচিত। এছাড়া পুলিশ বাহিনীর একাংশের অপরাধপ্রবণতার বিষয়টিও নতুন নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের মাত্রা কমাতে হলে প্রথমে এর পেছনে থাকা কারণগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনে উদ্যোগ নিতে হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে সামাজিক অপরাধ কমে আসবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। অবশ্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জবাবদিহি প্রতিষ্ঠাও জরুরি। রাজধানীসহ সারা দেশে হত্যা-খুনসহ সব ধরনের অপরাধ ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।