আমরা অনেকেই ‘দই’ খাওয়ার কথা ভাবলে ভেসে ওঠে মিষ্টি দইয়ের কথা। কিন্তু টক দইয়ে রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। প্রতিদিন টক দই খেলে আপনার শরীর থেকে অনেক রোগ পালিয়ে যাবে।
এছাড়া ওজন যত সহজে বেড়ে যায়,ওজন কমানো তত সহজ নয়। বিশেষ করে পেটের সমস্যা নিরসনে ও ওজন নিয়ন্ত্রণে টক দই দারুণ ভূমিকা রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিয়মিত টক দই খেলে পেটের সমস্যা কমে, শরীর ঠাণ্ডা থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
তবে ওজন কমানোর পর্বে রোজের খাদ্যতালিকায় কী থাকছে, সেটা খুবই জরুরি। এমন কিছু রাখতে হবে যা পেট ভরা রাখবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে দই কিন্তু দারুণ বিকল্প হতে পারে। ওজন কমাতে টক দইয়ের ভূমিকা দারুণ। তবে শুধু টক দই খেলেই হবে না। দই খাওয়ার সঠিক উপায় জানতে হবে।
ওজন কমাতে ওটসের ভূমিকা নতুন করে কিছু বলার নেই। টক দইয়ের সঙ্গে যদি ওট্স থাকে, তাহলে তো ওজন কমানো নিয়ে আর কোনো চিন্তাই রইল না। সকালের নাশতায় অনায়াসে খেতে পারেন ওটস দই মসলা।
কীভাবে বানাবেন? ওটস নরম করে সেদ্ধ করতে বসান। সেদ্ধ হয়ে এলে এতে মেশান পেঁয়াজ কুচি, শসা কুচি, গাজর, টমেটো কুচি, সামান্য মরিচ গুঁড়া, গোলমরিচ গুঁড়া,লবণ। এবার একটি পাত্রে তেল গরম করে তাতে সর্ষে ও ধনেপাতা ফোড়ন দিয়ে ওট্স আর সবজিগুলো দিয়ে দিন। একটু নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি ওট্স সবজি মসলা।
দেখে নিন টক দইয়ের উপকারী দিকগুলো-
১. টক দই প্রোবায়োটিকের কাজ করে। হজমপ্রক্রিয়া এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রোবায়োটিক কার্যকরী। টক দই পেট ফোলা কিংবা ডায়রিয়ার সমস্যা থেকে রেহাই দিতে সাহায্য করে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হলে টক দই একটি ভালো বিকল্প। টক দইয়ে প্রচুর প্রোটিন থাকে তাই অনেকক্ষণ ক্ষুধা লাগে না। অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছেও আপনার কমে যাবে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হয়।
৩. রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে টক দইয়ের উপাদান কার্যকর। টক দইয়ের ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়ামের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বেড়ে যায়।
৪. মজবুত হাড় গঠনে টক দই খুব কার্যকর। এক কাপ দইয়ে অন্তত ২৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে। প্রতিদিন সকালে নাশতায় এক কাপ টক দই খেলেই হলো।
দই খেতে পারেন এই নিয়মগুলো মেনে, তাহলে ওজন কমবে দ্রুত-
১. টমেটো কুচি, পেঁয়াজ কুচি, জিরা গুঁড়ো, কাঁচা মরিচ কুচি, চাট মসলা এবং বেশি করে টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে বানিয়ে নিন রায়তা। ওজন কমাতে সাহায্য করবে এই খাবার।
২. ফল ওজন কমানোর পাশাপাশি সামগ্রিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। আপনার প্রিয় ফল কেটে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। আপেল, কিউই, কলা, পেয়ারা, ডালিম, তরমুজের সঙ্গে দই মিশিয়ে খেতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য এই খাবার আদর্শ। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ।
৩. গ্রানোলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। দইয়ের সঙ্গে গ্রানোলার মিশ্রণ লো-ক্যালরিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার। সুগার-ফ্রি, লো-ফ্যাট বা কম চিনিযুক্ত গ্রানোলা খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।
৪. দইয়ের সঙ্গে খেজুর, আখরোট এবং অন্যান্য ড্রাই ফ্রুটস খেতে পারেন। ড্রাই ফ্রুটস, বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট ও ক্যালরি পোড়াতে কার্যকর।
৫. ওজন কমাতে ওটসের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আর যদি টক দইয়ের সঙ্গে ওটস মিশিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে তো আরও উপকার পাবেন।