Published : Monday, 12 August, 2024 at 8:36 PM, Update: 13.08.2024 2:44:51 PM
৩৬ জুলাই অর্থ্যাৎ ৫ ই আগস্ট বিজয়ের উল্লাসের আনন্দ মিছিলের অংশ নিয়েছিল দুই সহোদর মেহরাজ আহমেদ মিথুন ও মাকুসুদুর রহমান মুন্না। তাদের সাথে ছিল মামাতো ভাই এসকে সজীব। সেদিন রাজধানীর পুরান ঢাকার ধুপখোলা থেকে তারা অংশ নেয় মিছিলে। বিকাল সাড়ে চারটায় দিকে বংশাল থানার সামনে যেতেই থানা পুলিশসহ কিছু সন্ত্রাসী এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। তারা তখন প্রাণ বাঁচাতে মালিটোলা পার্কের পিছনের দিকে চলে যায়। কিন্তু গুলির মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকে। হঠাৎ একটা গুলি মুন্নার পিঠে লাগে। সাথে সাথে ও মাটিতে লুটিয়ে পরে সে।
মেহরাজ আহমেদ মিথুন জানায়, ‘গুলিতে আহত হবার পর ছোটো ভাই মুন্নাকে গিয়ে তখন জাপটে ধরি। তার পিঠে হাত দিয়ে দেখি রক্তে ভিজে গেছে পুরো শরীর। আমি সহ আন্দোলনরত আরও কিছু ভাই সাথে সাথে ওকে তুলে নিয়ে মিটফোর্ডে যাই। আমার মনে হচ্ছিল আমার ভাইকে মনে হয় আর বাঁচাতে পারবোনা। মিটফোর্ড থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে এক্সরে করার পর খন ডাক্তার দেখেন গুলি অনেকটা ফুসফুসের কাছে এবং গুলির মোট তিনটা টুকরো। ডাক্তার তখন সাথে সাথে মহাখালী বক্ষব্যাধী হাসপাতালে রেফার করে। এমন একটা দিন কোনো অ্যাম্বুলেন্স পাচ্ছিলাম না। সারা রাস্তা জ্যাম। তারপর এক হৃদয়বান অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভার আমাদের নিয়ে যেতে রাজি হলেন। সারারাস্তা ছিল বিজয় উল্লাসের জ্যাম এবং সবখানেই চেকিং হয়েছিল যে কোনো পুলিশ কিংবা আওয়ামী লীগের কেউ অ্যাম্বুলেন্সে পালাচ্ছে কিনা।’
মিথুন আরো জানায়, কোনোমতে হসপিটালে ভর্তি কারার পর ডাক্তার বললেন ইমার্জেন্সি ৭ ব্যাগ ব্লাড রেডি করতে। বহু চেষ্টার পর ডোনার জোগাড় করা গেল। তারপর ট্রিটমেন্ট শুরু হয়। এখনও অপারেশন হয়নি। ওর পিঠের ভেতর এখন বুলেট রয়েছে। বুলেটটি তিন টুকরা হয়েছে। একটা টুকরো ফুসফুসের আশেপাশে আছে তাই ডাক্তার সময় নিচ্ছেন। তবে ও এখন আলহামদুলিল্লাহ অনেকটা ভালো। সব খাবার খাচ্ছে এবং একটু একটু হাঁটাচলা ও করছে। তবে আমি আজ বুক ফুলিয়ে বলতে পারব আমিও একজন যোদ্ধার ভাই। আমার ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা।
মাকুসুদুর রহমান মুন্না (১৮) মানিকগঞ্জের ঝিটকা খাজা রহমত আলী ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বড় ভাই মেহবার হোসেন মিথুনের বাসায় থেকে সে কোচিং করত। তাদের বাড়ি হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা সদরে এবং বাবা নাজমুল হোসেন মন্টু।