ই-পেপার শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম: পিকে হালদারসহ ১৪ জনের মামলার রায় ৮ অক্টোবর       ইতালিতে ফ্লাইওভার থেকে বাস ছিটকে পড়ে নিহত ২১       প্রবল বৃষ্টিতে সিকিমে আকস্মিক বন্যা, ২৩ ভারতীয় সেনা নিখোঁজ       জলবায়ু তহবিলে ‌‌`সমানভাবে' অর্থায়ন চাইলেন শেখ হাসিনা        আবারও বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম        বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অন্যদল ক্ষমতায় আসলেও বাসন্তীদের ভাগ্যের কোন পররিবর্তন হয়নি: প্রধানমন্ত্রী        দেশকে ধ্বংস করার জন্য দুই-তিনটা রাজনৈতিক দল ষড়যন্ত্র করছে: আইনমন্ত্রী       




পরিবারের জন্য ৭ বছর পড়ালেখার পাশাপশি দোকান করছেন তানজিলা সাথী
লালমোহন (ভোলা) সংবাদদাতা
Published : Tuesday, 28 November, 2023 at 3:24 PM
১৪ বছর বয়সী তানজিলা সাথী। ভোলার লালমোহন কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ৭ বছর বয়স থেকেই বাবার ফুচকার দোকানে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। বর্তমানে সে ফুচকা তৈরী, চটপটি বানানো, ঝালমুরি ও নুডলস তৈরী করে বিক্রি করছেন। বাবা অসুস্থ থাকলে একাই দোকান পরিচালনা করেন সে। ভোলার লালমোহন পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ড চরছকিনা গ্রামের খজ্জু হাওলাদার বাড়ীর মো. আবুল কালামের মেয়ে তানজিলা সাথী। ৩ বোন এক ভাইর মধ্যে মেঝ মেয়ে তানজিলা। তার বাবার ফুচকার দোকান লালমোহন সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্কের মধ্যে। বড় বোন বিয়ে হওয়ার কারণে স্বামীর বাড়িতে থাকেন। ঘরে রয়েছে মা, ছোট বোন এবং সবশেষে একটি ভাই।  

তানজিলার সাথে কথা বললে সে জানায় গত সাত বছর ধরে বাবার দোকানের কাজে সহযোগিতা করছে সে। পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। যখন দোকানে কাস্টমার থাকে না তখন সে নিজে একা একা দোকানে বসে পড়ালেখা করে। প্রতিদিন সকালে এসে দোকান খুলি। ৯টার দিকে স্কুলে চলে যায়। ২টায় স্কুল ছুটি হওয়ার পর বাড়ীতে গিয়ে ভাত খেয়ে দোকানে চলে আসি। এসেই কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ি ফুচকা, চটপটি, ঝালমুরি, নুডলস তৈরি করি। কাস্টমারেরা তৃপ্তি সহকারে খান। কাস্টমারেরা খাওয়ার পর পেলেট পিরিজ চামুচসহ অন্যান্য সামগ্রি ভালোভাবে ধুয়ে পরিস্কার করি। যখন পার্কে কোনো অনুষ্ঠান হয় তখন কাস্টমারের অনেক ভীর থাকে। বেচাকেনা ভালো হয়। যখন কোনো অনুষ্ঠান থাকে না তখন বেচাকেনা কম হয়। দোকানের আয় দিয়েই আমাদের সংসার চলে। বেচাকেনার মধ্যেই চলে আমার পড়ালেখা। দোকানে যখন কাস্টমার থাকে না তখন আমি পড়ালেখা করি। আমি আমাদের দোকানে বাবার কাজে সহায়তা ও আমাদের সংসার ভালোভাবে চলার জন্য প্রতিদিন লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ করছি। বাবা অসুস্থ্য হলে আমি একাই দোকান পরিচালনা করি। সাথীর স্বপ্ন আমি পড়ালেখা শেষে চাকুরী করে বাবা মা ও পরিবারের পাশে দাড়াব।

তানজিলা সাথীর বাবা মো. আবুল কালাম বলেন, ছোট থেকেই তানজিলা আমার ফুচকার দোকানে আমাকে সহযোগিতা করছেন। দোকানে কর্মচারী রাখতে পারছিনা তাই মেয়েকে দিয়ে দোকান পরিচালনা করছি। প্রায় ৭ বছর যাবত মেয়ে আমার দোকানে আমার সাথে রয়েছে। পাশাপাশি মেয়ে পড়ালেখা করছে। এই বছর সে লালমোহন কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে বার্ষিক পরীক্ষা দিচ্ছে। আগামীবছর দশম শ্রেণিতে উঠবে। আমার ৩ মেয়ে ১ ছেলে। সবার ছোট ছেলে। এই দোকানের আয় দিয়েই আমার পুরো সংসার চলে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আমি এখন অনেক অনুস্থ্য। টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসা করাতে পারছিনা। মাঝে মধ্যে অসুস্থ্য হয়ে পড়ি তখন মেয়ে সাথী একাই দোকান পরিচালনা করে। আমি পার্কের ফুটপাতে দোকান করছি। আমার স্থায়ী একটি দোকান হলে ভালো হতো।

ফুচকা খেতে আসা ঝরণা, আমেনা, মিমি, আরজু, ইকবালসহ কয়েকজন জানান, সাথীর হাতের ফুচকা অনেক ভালো। পার্কে আমরা আসলেই সাথীর হাতের ফুচকা খায়। ও খুব ভালো এবং সুস্বাধু ফুচকা তৈরী করে। মাঝে মধ্যে আমরা ঝালমুরি, চটপুটি ও নুডুলস খায়। পড়ালেখার পাশাপশি বাবার দোকানে ও কাজ করে পরিবারে সহযোগিতা করছে এটা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা। আমরা সাথীর উজ্জল ভবিষ্যত কামনা করছি। 
 
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনামিকা নজরুল বলেন, ওই শিক্ষার্থীর পড়ালেখার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আমরা চাই; প্রতিটি শিক্ষার্থী সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হোক।





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক : কে.এম. বেলায়েত হোসেন
৪-ডি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত এবং মনিরামপুর প্রিন্টিং প্রেস ৭৬/এ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স: ৪১০৫২২৪৫, ৪১০৫২২৪৬, ০১৭৭৫-৩৭১১৬৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন: ৪১০৫২২৫৮
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পিএবিএক্স: ৪১০৫২২৪৫, ৪১০৫২২৪৬, ০১৭৭৫-৩৭১১৬৭, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন: ৪১০৫২২৫৮
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected]