আওয়ামী লীগের রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী রয়েছে সিলেট-৩ আসনে। তফসীল ঘোষণার আগ থেকেই নির্বাচনী মাঠে প্রস্তুতি নিয়ে চষে বেড়িয়েছেন অনেকেই। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছেন প্রবাসী প্রার্থীও রয়েছেন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সোমবার পর্যন্ত এই আসনের জন্য আওয়ামী লীগের অন্তত ৯ জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে এই সংখ্যা ২১ নভেম্বর শেষ দিন পর্যন্ত আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আসনের ভোটাররা।
দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নিয়ে সিলেট-৩ আসন। সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তৎপরতা সবচেয়ে বেশি এই আসনে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তৎপরতা সে অর্থে নেই বললেই চলে।
এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব। ২০২১ সালের ১১ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস মারা যান। এরপর এ আসনের উপনির্বাচনে বিজয়ী হন তিনি। আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হচ্ছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ইহতেশামুল হক চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শমসের জামাল এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কফিল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রকিব, ড. মিসবাহুর রহমান, মতিউর রহমান ,যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও সর্ব-ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা মুহাম্মদ মনির হোসাইন এবং ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মুজিবুর রহমান আলোচনায় আছেন।
মনোনয়নের বিষয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। স্বাভাবিকভাবেই এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যাও বেশি থাকবে। তবে নির্বাচিত হওয়ার পর অনেক বড় প্রকল্পের কাজের অনুমোদন করিয়েছি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। সেতু, কালভার্ট, রাস্তা, পার্ক, স্টেডিয়াম নির্মাণ থেকে শুরু করে অনেক কাজ করেছি, এখনো অনেক কাজ চলমান। এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অন্তত ৯০ শতাংশ আমি পূরণ করতে পেরেছি। ভোটাররাও আমার কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট।’
এই আসনে সবচেয়ে বেশি তৎপর ইহতেশামুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের মধ্য দিয়ে আমার রাজনীতিতে হাতেখড়ি। দায়িত্বশীল অনেক পদেও ছিলাম। পরে পেশাগত জীবনে ঢুকেও বিএমএর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। এখন অবসর জীবনে এসে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি। দলীয় প্রধান মনোনয়ন দিলে অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।’
এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের বাইরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আতিকুর রহমানের সমর্থনে এলাকায় বিলবোর্ড-ফেস্টুন দেখা গেছে। এর বাইরে বিএনপি নির্বাচনে এলে এখানে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী মনোনয়ন পাবেন বলে জোর প্রচারণা আছে। তিনি ছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার এম এ সালামও এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আছেন। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এখানে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান আহমদের নাম শোনা যাচ্ছে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির এখন নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপি এখন আন্দোলন-সংগ্রাম করছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচনেই বিএনপি যাবে না। তবে বিএনপি যেহেতু গণমানুষের দল, তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা আন্দোলন করছি। তাই নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা না থাকলেও আমরা এলাকার মানুষ থেকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নই।’