গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি হরিণাচালা এলাকায় (৬) বছরের শিশু বায়েজিদ হত্যার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গেল শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে টঙ্গীর বিসিক শিল্পনগরীর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামির নাম আরিফুল ইসলাম (২৯)। তিনি পাবনা জেলার সুজানগর থানার ভাতশালা গ্রামের তফিজ উদ্দিনের ছেলে।
নিহত শিশু কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার বানিয়াপাড়া গ্রামের মোঃ খালেদ মাহমুদ রাসেলের ছেলে। বাবা মায়ের সঙ্গে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি হরিণাচালা এলাকায় মজিবুর রহমানের নিচ তলায় ভাড়া থাকতেন। শিশুটির বাবা একটি পোশাক কারখানায় চাকুরি করতেন।
সোমবার (১৯ নভেম্বর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) আবু তোরাব মোঃ শামছুর রহমান তার সম্মেলন কক্ষে এক প্রেসব্রিফিংয়ে বলেন, গাজীপুর মহানগরীর হরিণাচালা এলাকায় গেল সোমবার শিশু বায়েজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাড়ির সিঁড়ির কোনায় লুকিয়ে রাখা হয়।
এ ঘটনার পর থেকে একই বাড়ির ভাড়াটিয়ে আরিফুল ইসলাম পালিয়ে যায়। পরে তাকে সন্দেহ হলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গেল শনিবার দুপুরে টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরীর ঢাকা ওয়াশ নামক একটি কারখানার সামনে থেকে শিশু বায়েজিদ হত্যার মূল হোতা আরিফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি শিশু হত্যার কথা স্বীকার করেছে। উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, আসামিকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, গেল ১১ নভেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে সে চাকুরির ইন্টাভিউ দিয়ে বাসায় ফিরছিল। বাসার সিঁড়ি দিয়ে নিচতলায় থেকে দ্বিতীয় তলায় উঠার সময় শিশু বায়েজিদ এর সঙ্গে তার শরীরের ধাক্কা লাগে।
এ সময় আসামি আরিফুল বাচ্চাটির গালে থাপ্পর মারে। থাপ্পর দেয়ার কারণে বাচ্চাটি চিৎকার করলে আরিফুল শিশুটির মুখ চেপে ধরে তার রুমে নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটি আরো জোড়ে চিৎকার করলে এসময় তার নাকে মুখে চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করে আরিফুল। পরে তার স্ত্রীর শাড়ী কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রেখে দেয়। গেল ১৩ নভেম্বর অনুমান রাত ৩টার দিকে লাশটি তার রুম থেকে বের করে দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির মাঝখানে পলিথিনে মুড়িয়ে রেখে যায়।
একই আসামি ইতিপূর্বে সাভার আশুলিয়া এলকায় আরো একটি ৮ বছরের শিশুকে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার নামে ওই থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। ওই মামলায় তার প্রথম স্ত্রীও আসামি।
শিশুর বাবা খালেদ মাহমুদ রাসেল জানায়, গেল (১১ নভেম্বর) দুপুরে শিশুটি নিখোঁজের পর খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পায়নি। এ ঘটনায় নিহতের পিতা কোনাবাড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের দুইদিন পর গেল (১৩ নভেম্বর) সোমবার ভোরে তাদের ভাড়া বাসার সিঁড়িতে পলিথিনে মোড়ানো বায়েজিদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।